কলকাতা : আর জি কর ধর্ষণ-খুনকাণ্ডের তদন্ত করছে সিবিআই। তাদের তদন্তের ভিত্তিতেই আদালত সঞ্জয় রায়ের আজীবন কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছে। এই সঞ্জয় রায়কেই একমাত্র অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। কিন্তু সঞ্জয়কেই একমাত্র দোষী হিসেবে মানতে নারাজ নির্যাতিতা চিকিৎসকের মা-বাবা। এবার তৃণমূলের অন্দর থেকেও তেমন সুরই শোনা গেল। তৃণমূল সাংসদ রচনা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় বললেন, আসল আসামিকে খুঁজে বের করাটাই মূল উদ্দেশ্য। অন্যদিকে এক প্রশ্নের উত্তরে তৃণমূলের তিনবারের বিধায়ক চিরঞ্জিত চক্রবর্তী বলেন, তাঁর তো মনে হয় না, আর জি কর কাণ্ডে দোষীরা সবাই এখনও ধরা পড়েছে। সঞ্জয় রায়কে আমৃত্য়ু কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছে শিয়ালদা আদালত। যদিও, নিহত চিকিৎসকের মা-বাবার দাবি, সঞ্জয় রায় একা নয়, এই ঘটনায় আরও অনেকে জড়িত। এই আবহেই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য় করলেন তৃণমূলের তিন বারের বিধায়ক, অভিনেতা চিরঞ্জিত চক্রবর্তী। নিহত চিকিৎসকের মা-বাবার সঙ্গে যার বক্তব্য়ের মিল রয়েছে। অভিনেতা ও তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক চিরঞ্জিত চক্রবর্তী বলেন, 'না। মনে হয় না তো। আমারও মনে হয় না। সবারই মনে হয় না। CBI চোখ বন্ধ করে আছে। কেন চোখ বন্ধ করে আছে বুঝি না। 'চিরঞ্জিতকে বলা হয়, 'পরিবার বলছে, আরও অনেকে যুক্ত আছে। তাদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। ' তিনিও তাতে সায় দিয়ে বলেন, 'হ্যাঁ। হচ্ছে না। হচ্ছে না, ধরলে তবে তো বলব। পয়েন্ট আউট করতে হবে তো। তারা দেখাবে CBI যাবে। CBI তো দেখলাম উপরে আরেকটা কি ৯ নম্বর ঘর না কী আছে, বলেইছিল রক্তের দাগ আছে সেখানে। তার চাবিই নাকি খোলেনি CBI. ঢোকেইনি। বহু মানুষ আছে ওখানে...চিহ্নিত। আগে থেকে বলা হয়েছিল এরা এরা। সেখানে তাদের কাউকে ক্রস এক্সামিন হয়নি।'
হুগলির তৃণমূল সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন,আসল আসামিকে খুঁজে বার করতে হবে! অর্থাৎ তিনিও মনে করেন না সঞ্জয় রায় একা অভিযুক্ত!রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আসল আসামিকে খুঁজে বের করাটাই হচ্ছে মূল উদ্দেশ্য। অপরাধী শাস্তি পাবে, এটাই আমরা চাই। যিনি বা যারা এই কাজটা করেছে তারা তো সাংঘাতিক অন্যায়ের কাজ করেছে। তাদের শাস্তি পাওয়াটা দরকার। সেটার জন্য যা যা করণীয় সেটা করা উচিত। সেটার জন্য যদি দিদির দ্বারস্থ হওয়া যায় তাহলে দিদি নিশ্চয়ই তার সমাধান খুঁজে বের করবেন।'
দলীয় সাংসদ-বিধায়কের এই মন্তব্য়ে যে তৃণমূল অস্বস্তিতে, তা তাদের প্রতিক্রিয়া থেকেই স্পষ্ট।তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ, বলেন,ওঁরা যদি কিছু জেনে থাকেন তাহলে সিবিআইয়ের কাছে গিয়ে বলুন! তৃণমূলের সাংসদ-বিধায়কদের কথার সঙ্গে তৃণমূল সরকারের পদক্ষেপের মিল খুঁজে পাচ্ছেন না নিহত চিকিৎসের মা-বাবা। নিহত তরুণী চিকিৎসকের বাবার দাবি,তাঁরা মুখে চাইছেন। তাঁরা যে চাইছেন না তার প্রমাণ হাইকোর্টে রেখেছেন।
তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। এখন প্রশ্ন হল, যদি ধর্ষণ-খুনকাণ্ডে আরও কেউ জড়িত থাকে, তাহলে সিবিআই কি তাকে বা তাদের খুঁজে বের করবে?