সন্দেশখালিতে অভিযোগ উঠেছে নারী নির্যাতনের। আর রাজভবনে মহিলা কর্মীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ খোদ রাজ্য়পালের বিরুদ্ধে। একই ধরনের অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও, একটি ঘটনায় বিজেপি সরব, অপরটিতেে তৃণমূল। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কোনও দলই কি আন্তরিকভাবে মহিলাদের পাশে আছে? নাকি যে যার সুবিধা মতো মহিলাদের ভোটের ফায়দার জন্য় ব্য়বহার করছে? প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে। 


সন্দেশখালিতে শিবু হাজরা, উত্তম সর্দার-সহ তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগ সামনে আসার পর, গোটা ঘটনাকে রাজনৈতিক চক্রান্ত বলে দাবি করে তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, '১৭ জনকে অ্য়ারেস্ট করা হয়েছে এবং আপনারা দেখেছেন, যারা মুখে মাস্ক পরে পরে ছবি তুলছে ধরাও পড়েছে বিজেপির কর্মী। কীভাবে তারা বাইরে থেকে নিয়ে এসে একটা এলাকাকে অশান্ত করার চেষ্টা করেছে। ' 


কিন্তু , রাজ্য়পালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ সামনে আসা মাত্র, সেই তৃণমূলই, কোনও তদন্তের আগেই, অভিযোগকে হাতিয়ার করে ময়দানে নেমে পড়েছে। আবার উল্টোদিকে, যে বিজেপি সন্দেশখালির নারী নির্যাতনের অভিযোগকে সামনে রেখে আন্দোলনে নেমেছে, তারাই আবার রাজ্য়পালের বিরুদ্ধে ওঠা শ্লীলতাহানির অভিযোগকে সাজানো বলে দাবি করছে। 


আবার সেখানে বিজেপির অবস্থান ঠিক উল্টো। বরং পুরো বিষয়টিকে তৃণমূলের পরিকল্পিত চিত্রনাট্য বলে দাবি করেছে। 'পুরো স্ক্রিপ্ট তৈরি করা ছিল। আর তৃণমূলই চেঁচাচ্ছে। আর বাইরের কারও টেনশন নেই। সবাই জানে ভিতরে কী আছে...এটাই শেষ অস্ত্র। তৃণমূলের কথায় কথায় মহিলা, মহিলা, মহিলা বলে। মহিলাদের ব্যবহার করে ওরা। এখানেও দেখা গেল একজন মহিলাকে ব্যবহার করা হয়েছে। '


মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় কিংবা অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় যেমন এখনও অবধি একবারও সন্দেশখালি যাননি, তেমনই রাজ্য়পালের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ ওঠার পর, বাংলায় তিন-তিনটি রাজনৈতিক সভা করলেও, এনিয়ে নীরবই থেকে গেছেন নরেন্দ্র মোদি। ২০১২ সালের নির্ভয়াকাণ্ড দিল্লিতে কংগ্রেসের গদি টলিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু এখন এ রাজ্য়ে নারী নির্যাতনের অভিযোগ কি স্রেফ রাজনীতির অস্ত্র? তাই কি Selective Aggression?  প্রশ্ন তুলছেন বিভিন্ন ক্ষেত্রের মহিলারা। 


সাহিত্যিক তিলোত্তমা মজুমদার বলেন,'পুতুলের মতো নারীদের ব্যবহার করা...আমি যদি ধরে নিই দুটি ঘটনাই সত্যি, তাহলে এটা চরম অসম্মানজনক,দুটোই জঘন্য অপরাধ ও শাস্তি হওয়ার যোগ্য। রাজনৈতিক স্বার্থে যদি মহিলাদের ব্যবহার করা হয়, তাহলে প্রথমেই যেটা মাথায় আসে, প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে যদি কোনও মহিলা থাকেন, তাহলে মহিলাদের বাড়তি সুবিধে কিছু হয় না।' 


কবি মন্দাক্রান্তা সেনের মতে, সাম্প্রতিক অতীতে রাজনীচির উদ্দেশে মেয়েদের খেলার পুতুল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই দল , ওই দলকে দুষছে। কিন্তু মেয়েদের যেটা প্রথম দরকার, নিরাপত্তা, সেই বিষয়ে রাজনৈতিক নেতা,  শাসক কারও কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই। 


আরও পড়ুন, শ্লীলতাহানির অভিযোগ ঘিরে তোলপাড়, ১ ঘণ্টা ৯ মিনিটের CCTV ফুটেজ দেখাল রাজভবন


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।