ভরতপুর: এবার ওসি-বিডিও-কে ডেডলাইন খোদ তৃণমূল বিধায়কের। ৭ দিন সময় দিলাম, কী করে সোজা করতে হয় জানিয়ে দেব। মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি, ৭ দিন দেখব, তারপরেই সিদ্ধান্ত জানাব। ভোটে বিজেপির হয়ে কাজ করেছেন ভরতপুরের ওসি। পুলিশ সুপারকে বলেও কোনও কাজ হয়নি। বিডিও-র বিরুদ্ধেও জেলা শাসকের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে। বিডিও এমন কাজ করছেন, যেন এলাকার মস্তান। থানায় চড়াও হওয়ার পর এবার ওসি-বিডিও-কে হুঁশিয়ারি ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের। জবরদখলের অভিযোগের পরে এবার বিজেপির হয়ে কাজ করার অভিযোগ তুলেছেন শাসক-নেতা। ভরতপুরের ওসি বা বিডিওর কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।


ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর এদিন বলেন, OC রাজু মুখোপাধ্যায়, বিভিন্নভাবে তিনি... যেমন ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী বলছিলেন, ইসকে বার ২০০ পার, তেমনি উনিও (ভরতপুর থানার OC) ওখানে গিয়ে বলছিলেন যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসতে পারবেন না, তৃতীয়বারের জন্য সরকার গড়তে পারবেন না। বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় আসবে। অনেকবার SP’কে বলা হয়েছে, SP কোনও কর্ণপাত করেননি। আমিই ওপেন আমার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমি জানাব, কী করে এদের সোজা করতে হয়।



ফের হুমায়ুন কবীরের নিশানায় ভরতপুর থানার ওসি।রাজ্য সরকার ব্যবস্থা না নিলে, তিনিই পদক্ষেপ করবেন। হুঁশিয়ারি দিলেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক। থানা লাগোয়া জমিতে বেআইনিভাবে নির্মাণ করাচ্ছেন ওসি রাজু মুখোপাধ্যায়। এই অভিযোগে শনিবার তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের নেতৃত্বে, ভরতপুর থানায় চড়াও হয়েছিলেন শয়ে শয়ে দলীয় কর্মী-সমর্থক থানার গেট আটকে চেয়ার পেতে বসে পড়েন খোদ বিধায়ক। একেবারে তুলকালাম পরিস্থিতি। রাত পর্যন্ত চলে বিক্ষোভ। শেষমেশ SDPO-র তরফে আশ্বাস পেয়ে বিক্ষোভ তুলে নেন তৃণমূল। কিন্তু, সোমবার বিধানসভায় এসে ফের ওসি-র বিরুদ্ধে সরব হলেন তৃণমূল বিধায়ক। 



সরাসরি অভিযোগ তুললেন, বিজেপির হয়ে কথা বলছেন ওসি রাজু মুখোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে বেলডাঙা দু’নম্বর ব্লকের BDO-র সমালোচনায় সরব হয়েছেন তিনি। হুমায়ুন কবীর বলেন, আমি যেখানে বসবাস করি, সেখানকার BDO, ৭০ রেজিনগর বিধানসভার অধীনে, কার মদতে জানি না, সেই অংশুমান দত্ত, তাঁর মালদায় বাড়ি। তিনিও BDO-গিরি করেন, মনে হয় লোকাল কোনও মস্তান, কোনও দলের! আমার নেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে লিখিতভাবে জানিয়েছি, ৭ দিনের মধ্যে যদি সুরাহা না হয়, আমি আবার ওপেন, আপনাদের বলতে হবে না, আমিই ওপেন আমার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমি জানাব, কী করে এদের সোজা করতে হয়।


হুমায়ুন কবীর যেভাবে পুলিশ অফিসার ও বিডিও-র বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে পাল্টা সরব হয়েছে বিরোধীরা। তৃণমূল বিধায়কের গ্রেফতারির দাবি তুলেছে বিজেপি। ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা রাহুল সিন্হার মন্তব্য, যদি পুলিশের মর্যাদা রাখতে চান, আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানাচ্ছি, অবিলম্বে হুমায়ুন কবীরকে গ্রেফতার করুন। নাহলে প্রমাণিত হবে, হুমায়ুনের মতো কিছু আমচা-চামচার হাতের তলায় আপনি নাচেন। 


বিধায়কের থানায় গিয়ে বিক্ষোভের ঘটনা যে, দল ভালভাবে নেয়নি তা আগেই বুঝিয়ে দিয়েছিল জেলার তৃণমূল নেতৃত্ব। তারপরও ওসি-র বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ায়, অসন্তোষ প্রকাশ করেছে রাজ্য নেতৃত্ব। এ প্রসঙ্গে কুণাল ঘোষের দাবি, আমরা খোঁজ নিয়ে দেখছি, চিঠি যখন লিখছে পার্টিকে জানাতে পারত, পার্টি আলোচনা করতে পারত।


ভরতপুর থানার ওসি রাজু মুখোপাধ্যায়। ২০২১-এর ফেব্রুয়ারি মাসে উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়া থানা থেকে বদলি হয়ে ভরতপুর থানার দায়িত্ব নেন। অতীতেও একাধিকবার তাঁকে হুঁশিয়ারি দিতে শোনা গেছিল হুমায়ুন কবীরকে।