সুব্রত গলুই, হাওড়া: উলুবেড়িয়া উত্তর (ulluberia north) বিধানসভা (assembly) কেন্দ্রের বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানকে ঘিরে প্রকাশ্যে চলে এল তৃণমূলের (TMC) দ্বন্দ্ব (inner clash)। একদিনের মধ্যে তৃণমূলের ব্যানারে (TMC) পৃথক দুটি বিজয় সম্মিলনী। বিধায়ক (MLA) নির্মল মাজিকে বহিরাগত বলে আক্রমণ তৃণমূলের একাংশের। পাল্টা জবাব দিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক। 


কী ঘটেছিল?
উলুবেড়িয়া উত্তরের প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি তপন চক্রবর্তী বলেন, ' বিধায়ক হবেন সব মানুষের। সকলের কাছে প্রিয়। তিনি অন্য কয়েক জনকে নিয়ে আসবেন, এসে পারিষদবর্গের মতো সাজিয়ে গুজিয়ে বসবেন আর লোককে গালাগালি করবেন?' পাল্টা উত্তর দিয়েছেন উলুবেড়িয়া উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক নির্মল মাজিও। বলেছেন, 'বিরোধী গোষ্ঠীর যে অনুষ্ঠান রয়েছে সেটা আমাদের নয়। বিজেপির।' এভাবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জোড়াফুলের ব্যানারে দুই বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজনে স্বাভাবিক ভাবেই সমালোচনার সুযোগ পেয়েছে বিরোধী শিবির। বুধবার স্নেহা উৎসব ভবনে উলুবেড়িয়া উত্তরের বিধায়ক নির্মল মাজির নেতৃত্বে বিজয় সম্মিলনীর আয়োজন করা হয়। সেই হলেই বৃহস্পতিবার, তৃণমূলের ব্যানারে আরও একটি বিজয়া সম্মিলনী করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন উলুবেড়িয়া উত্তর কেন্দ্রের প্রাক্তন সভাপতি তপন চক্রবর্তী। ছিলেন আমতা ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা। সেই বিজয় সম্মিলনীর মঞ্চ থেকে বিধায়ক নির্মল মাজির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি। বলেছেন, 'এটা বিধায়কের এর কাজ নয়। সিপিএমের থেকেও খারাপভাবে লাঞ্চিত করছে কর্মীদের। কর্মীরাই আসল সম্পদ আর সেই সম্পদকেই নষ্ট করছেন একজন বহিরাগত।' ছেড়ে দেননি নির্মলও। বলেন, 'আমাদের কিছু লোক বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে ছিল। তারা যত না আসে, ততই মঙ্গল।'


আক্রমণাত্মক বিরোধী শিবির...
বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে উলুবেড়িয়ায় তৃণমূলের এই কোন্দলের সুযোগ যে বিরোধী শিবির ছেড়ে দেবে না, সেটা মোটামুটি স্পষ্ট। বস্তুত, তৃণমূলে গোষ্ঠী কোন্দলের অভিযোগ এটাই প্রথম নয়। রাজ্যের নানা প্রান্তে কম-বেশি প্রায়ই অন্তর্কলহের অভিযোগ শোনা যায়। গত বছর, পুর প্রশাসক মন্ডলী গঠনের পরই বর্ধমানে প্রকাশ্যে এসেছিল শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দল। পুরসভায় বিক্ষোভ দেখান বিধায়ক ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা। বর্ধমান পুরভায় মুখ্য প্রশাসক ও উপ মুখ্য প্রশাসক নির্বাচন করা হয়। উপ মুখ্য প্রশাসক পদে আইনুল হককে মানতে রাজি হনন তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক। তিনি বর্ধমান দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক খোকন দাসের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতার দাবি থছিল, বাম আমলে পুরসভার চেয়ারম্যান থাকাকালীন তৃণমূল কর্মীদের উপর অত্যাচার করেছেন আইনুল হক। দলের নিচু স্তরের ক্ষোভের কথা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দিতেই বিক্ষোভ। এমনটাই দাবি করেন তৃণমূল নেতা।


আরও পড়ুন:কোটি কোটি টাকা উদ্ধারের ঘটনায় ভিনরাজ্য থেকে গ্রেফতার 'পান্ডে ব্রাদার্স'