সিঙ্গুর: লোকসভা নির্বাচনের মুখে বেছে বেছে বিরোধীদের নিশানা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। সেই নিয়ে আবারও কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার এবং BJP-কে নিশানা করলেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। অভিষেকের দাবি, মানুষের উপর আস্থা রাখতে পারছে না BJP। BJP ভীত-সন্ত্রস্ত, তারা ভয় পাচ্ছে বলেই এই ধরনের কাজকর্ম করছে। (Lok Sabha Elections 2024)
মঙ্গলবার সিঙ্গুরে সাংগঠনিক বৈঠকে যোগ দিতে যান অভিষেক। সেখান থেকেই BJP এবং কেন্দ্রকে নিশানা করেন অভিষেক। রাজ্যে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা NIA-র সঙ্গে BJP-র মধ্যে যোগসাজশ রয়েছে বলে অভিযোগ করছে তৃণমূল। সেই নিয়ে বেশ কিছু নথিপত্র তুলে ধরা হলেও নির্বাচন কমিশন সক্রিয়তা দেখাচ্ছে না বলে দাবি করছে তারা।
লোকসভা নির্বাচনের আগে CBI, ED, NIA এবং আয়কর বিভাগকে দিয়ে বিরোধীদের হেনস্থা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। সেই সুরেই এদিন অভিষেক বলেন, "BJP ভীত, সন্ত্রস্ত। ভয় পাচ্ছে ওরা। মানুষের উপর আস্থা রাখতে পারছে না। ভয় পাচ্ছে বলেই এসব কাজ করছে। গণতন্ত্রের উৎসব নির্বাচন। কিন্তু সেই নির্বাচনে গণতান্ত্রিক অধিকার যাতে কেউ প্রয়োগ করতে না পারে, তার ব্যবস্থা করছে। বেছে বেছে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের চিহ্নিত করে তাদের প্রার্থী, অঞ্চল সভাপতিদের হেনস্থা করা হচ্ছে।"
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল থেকে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন, যাঁরা বশ্যতা স্বীকার করেননি, তাঁদের জেলে যেতে হয়েছে বলে এদিন অভিযোগ করেন অভিষেক। অভিষেকের দাবি, সারদায় নাম থাকা অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বশ্যতা স্বীকার করেছেন বলে তাঁকে ED, CBI ডাকে না। যাঁরা বশ্যতা স্বীকার করেননি, মেরুদণ্ড বিক্রি করেননি, তাঁদের জেলে ঢোকানো হচ্ছে। যাঁরা মানুষের অধিকারকে গুরুত্ব না দিয়ে নিজেদের সর্বেসর্বা মনে করছেন, দেশের মানুষ তাঁদের বিচার করবেন। এটা একনায়কতন্ত্র মানুষ জবাব দেবেন।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ইতিমধ্যেই BJP নেতৃত্বাধীন NDA-কে ৪০০ আসনের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহ। লক্ষ্যপূরণ কতটা হবে জানতে চাইলে অভিষেক বলেন, "সব জায়গায় বলছে ৪০০ পার। বিজেপি নিজের কর্মীদের যে লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছে, সেটাও একটা জুমলা। মানুষ ঠিক করবেন ওরা ২০০ পার করবে কি না। কিন্তু ওরা মানুষের উপর আস্থা রাখতে পারছে না বলে এসব করছে। আগেভাগে মাঠ ফাঁকা করে দিচ্ছে। কোনও অপশন দেবে না কাউকেষ নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ, অবাধ ভোট চান না এঁরা। নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীকে জেলে পুরে দিচ্ছে। BJP-র সঙ্গে বৈঠকের পর অঞ্চল সভাপতিদের বাড়িতে যাচ্ছে NIA. প্রধানমন্ত্রী বলছেন, দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে লড়াই করবেন উনি লড়ুন না! কিন্তু বেছে বেছে ধরছেন। মাথা বিক্রি করলে ধোয়া তুলসিপাতা হয়ে যাচ্ছে কেউ কেউ, আর মাথা উঁচু করলে ED, CBI দেখা যাচ্ছে। এই ধরনের রাজনীতি মানুষ পছন্দ করেন না। CPM ভেবেছিল, ওরা চিরকাল বাংলায় ক্ষমতায় থাকবে। এখন শূন্য ওরা। BJP-র কী পরিণতি হয় দেখবেন। বাঁচানোর লোক থাকবে না।" এর আগে, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও BJP ২০০ আসনের লক্ষ্য নিয়েছিল, আগামী ৪ জুন ভোটবাক্স খোলা হলে তার চেয়েও খারাপ ফল হবে বলে মন্তব্য করেন অভিষেক।