কলকাতা : SIR নিয়ে চড়ছে রাজনৈতিক পারদ। গতকালই পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে SIR-এর দ্বিতীয় পর্যায় শুরুর কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার। এই ইস্যুতে প্রথম থেকেই নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে আসছে রাজ্যের শাসকদল। এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে SIR-প্রসঙ্গে সুর চড়ালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। স্পষ্ট বললেন, "এই ভোটার লিস্ট যদি ত্রুটিযুক্ত হয়, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রথম দায়, দায়িত্ব, কর্তব্য- প্রথমে লোকসভা ভেঙে দিয়ে আপনি ভোটে যান।"
তাঁর যুক্তি, "তাদের লক্ষ্য, কোনও দিন SIR করে ভোটার লিস্ট ত্রুটিমুক্ত করা নয়। যদি তাই লক্ষ্য থাকত, এই ভোটার লিস্টের নিরিখেই ২০২৪ সালে আজ থেকে দেড় বছর আগে লোকসভা নির্বাচন হয়েছে। যেখানে বাংলা-সহ দেশের ৫৪৩টি লোকসভা কেন্দ্রে সাংসদরা নির্বাচিত হয়েছেন। পরবর্তীকালে দেশের সরকার এসেছে এবং প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। এই ভোটার লিস্ট যদি ত্রুটিযুক্ত হয়, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রথম দায়, দায়িত্ব, কর্তব্য- প্রথমে লোকসভা ভেঙে দিয়ে আপনি ভোটে যান। আমরা তো ভোট থেকে পালিয়ে যাচ্ছি না। এই ভোটার লিস্ট যদি ত্রুটিযুক্ত হয়, তাহলে এই ভোটার লিস্টে আমিও সাংসদ হয়েছি। দেশের প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী থেকে শুরু করে, যাঁরা মন্ত্রিসভায় আছেন, তাঁরা নির্বাচিত হয়েছেন এই ভোটার লিস্টের নিরিখে। তাঁদের মৌলিক দায়িত্ব ইস্তফা দিয়ে, তারপর আপনি SIR করুন না। কেউ তো বারণ করছে না।"
অভিষেকের সংযোজন, "আগে মানুষ ভোট দিয়ে দেশের সরকার নির্বাচিত করত। এখন দেশের সরকার কে ভোট দেবে তাদের সিলেক্ট করছে। আগে ভোটাররা ভোট দিয়ে সরকার নির্বাচিত করত। এখন দেশের সরকার পছন্দের মতো তার ভোটার বেছে নিচ্ছে। কে ভোটার লিস্টে থাকবে, আর কার নাম বাদ যাবে।"
একনজরে SIR প্রক্রিয়া
মঙ্গলবার থেকেই পশ্চিমবঙ্গে শুরু SIR। অর্থাৎ ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধন। এই প্রক্রিয়ায় কাদের নতুন করে নাম তুলতে হবে, কাদের কী নথি দিতে হবে, কাদের কোনও নথিই দিতে হবে না--- তা বিশদে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। পশ্চিমবঙ্গে শেষবার SIR হয়েছিল ২০০২ সালে। তাই সেই বছরের ভোটার তালিকার ভিত্তিতেই এরাজ্য়ে SIR প্রক্রিয়া এগোবে। ইতিমধ্য়ে পশ্চিমবঙ্গের ২০০২ সালের ভোটার তালিকা মুখ্য় নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে। ২০০২ সালের তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁদের এবার আর কোনও নথি দিতে হবে না। ২০০২ সালের তালিকায় মা-বাবার নাম থাকলেও আর কোনও নথি লাগবে না। শুধু কমিশনের ওয়েবসাইটে গিয়ে গিয়ে 'ম্য়াচিং' প্রক্রিয়া করে নিতে হবে। যা ভোটাররা নিজেরাই করে নিতে পারবেন। ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় যাঁদের নিজেদের বা মা-বাবার নাম নেই, তাঁদের নথি দিয়ে নাম তুলতে হবে।