কলকাতা: সীমান্ত পেরিয়ে পড়শি বাংলাদেশে গরুপাচারের (Cattle Smuggling Case) ক্ষেত্রে বীরভূমের (Birbum) মাটিকে সেফ প্যাসেজ হিসেবে ধরা হতো বলে অভিযোগ। সেই নিয়ে এ বার বীরভূমের তৃণমূল (TMC) সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal)-এর ভূমিকা জানতে তৎপরতা বাড়াল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (CBI)। শনিবার সকাল থেকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তাঁকে। তাতে গরুপাচারে বীরভূমকে সেফ প্যাসেজ হিসেবে ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনুব্রত এবং আর কোন প্রভাবশালী কত টাকার ভাগ পেতেন, জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। 


দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ অনুব্রতকে


শনিবার সকাল ১০টা থেকে অনুব্রতকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। শারীরিক অবস্থার জন্য মাঝে কিছুটা বিরতি দেওয়া হয়। আড়াইটে নাগাদ বাইরে থেকে মধ্যাহ্ণভোজ আসে অনুব্রতর জন্য। তার পর ফের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। তাতে সিবিআই-এর তরফে অনুব্রতর সামনে বেশ কিছু নথি তুলে ধরা হয়।  সেগুলি দেখিয়ে গোটা মামলায় তাঁর এবং অন্য প্রভাবশালীদের কার কার কাছে, কত টাকা করে পৌঁছত, তা জানার চেষ্টা করেন গোয়েন্দারা। 


সিবিআই সূত্রে খবর, তাদের কাছে যে নথিপত্র রয়েছে, সেই অনুযায়ী, ইলামবাজারের সুখবাজার পশুহাটে একসঙ্গে এনে রাখা হত গরু। এর পর বীরভূমের বিভিন্ন রাস্তাকে নিরাপদ প্যাসেজ হিসেবে ব্যবহার করে পাচার করা হতো বাংলা দেশে। তার জন্য অনুব্রত এবং প্রভাবশালীরা টাকার ভাগ পেতেন বলে সন্দেহ তদন্তকারীদের। তাই যাবতীয় নথি তুলে ধরে অনুব্রতর জবাব চাওয়া হচ্ছে। 


আরও পড়ুন: Anubrata Mondal News Live : সুপার মুখ খুলতেই ফের বিস্ফোরক অনুব্রতর বাড়িতে যাওয়া চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারী


গরুপাচার মামলায় এর আগে গ্রেফতার হন সীমাত্ররক্ষীবাহিনীর প্রাক্তন কমান্ডান্ট সতীশ কুমার। ২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৩৬ নম্বর ব্যাটেলিয়নে কর্মরত ছিলেন তিনি। ওই দু’বছরে সীমান্ত দিয়ে ২০ হাজারের বেশি গরু পাচার হয়েছিল বলে জানতে পেরেছে সিবিআই। অভিযোগ, গরু পিছু ২০০০ টাকা করে পেতেন বিএসএফ কর্তারা। কাস্টমস অফিসাররা পেতেন ৫০০ টাকা করে। এর বাইরে, বীরভূম, মালদা এবং মুর্শিদাবাদকে গরুপাচারের সেফ প্যাসেজ হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রভাবশালীদের কাছেও নগদে মোটা টাকা পাঠানো যেত বলে অভিযোগ। সেই সব নথি সাজিয়েই অনুব্রতর জন্য প্রশ্ন সাজিয়েছেন গোয়েন্দারা। 


কার কার কাছে ভাগের টাকা যেত, জানতে চাইছে সিবিআই


সিবিআই-এর একটি সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত জমি-বাড়ি মিলিয়ে বিপুল সম্পত্তি কিনেছিলেন অনুব্রত। কোনওটা নিজের নামে কিনেছিলেন, কোনওটা স্ত্রী এবং কোনওটা মেয়ের নামে। এমনকি এক এক মাসে ১০-১৫ দিন অন্তর তাঁর জমি কেনার প্রমাণ মিলেছে বলে দাবি সিবিআই-এর। কীভাবে তিনি এই সম্পত্তি কিনলেন, তাও জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা।