সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, মালদা : মালদার তৃণমূল নেতা দুলাল সরকারকে খুনের চক্রান্তে সামিল তাঁরই ঘনিষ্ঠ কেউ? পুলিশ সূত্রে খবর, ঘনিষ্ঠদের নিয়েই ঘোরাফেরা করতেন মালদার তৃণমূল জেলা সহ সভাপতি। খুনের দিন কিন্তু একাই ছিলেন দুলাল, তাঁর ঘনিষ্ঠরা ব্যস্ত ছিলেন নববর্ষের কার্নিভাল নিয়ে। এই একা থাকার সুযোগ নিয়েছিল আততায়ীরা। প্রশ্ন উঠছে, তৃণমূল নেতা ওইদিন একা থাকবেন, তার আগাম খবর কীভাবে পৌঁছল দুষ্কৃতীদের কাছে? পুলিশের দাবি, খুনের আগে, খুনের দিন ও খুনের পর, একাধিক টেলিফোনিক কথাবার্তার প্রমাণ মিলেছে। কার সঙ্গে কী কথা হয়েছিল জানতে, অভিযুক্ত অমিত রজকের মোবাইলের ফরেন্সিক পরীক্ষা হবে। ডিজিটাল তথ্য থেকে তৃণমূল নেতার খুনের ‘আসল মাথা’র হদিশ মিলতে পারে, ধারণা তদন্তকারীদের।


পুলিশের অনুমান, শুধুমাত্র শত্রুতার জন্য বাইরে থেকে কেউ এসে দুলাল সরকারের উপর হামলা করেনি। এর সঙ্গে তৃণমূল নেতার ঘনিষ্ঠ কেউ যুক্ত থাকতে পারে। সেই কারণে দুলাল সরকার ঘনিষ্ঠ বেশ কয়েকজনের গতিবিধির উপর নজর রেখেছে পুলিশ। ঘটনার দিন দুলাল সরকার যে একা থাকবেন, তাঁর অনুগামীরা সেদিন সঙ্গে থাকবেন না, এই তথ্য কেউ আগে থেকে আততায়ীদের দিয়েছিল কিনা তা খতিয়ে দেখছে রাজ্য পুলিশ। 


দুলাল সরকার খুনে গ্রেফতার হওয়া নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি এবং স্বপন দেবনাথ চারদিন ধরে পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন। তাঁদের ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। যদিও খুনের মোটিভ এখনও স্পষ্ট নয়। ১৪ তারিখ পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে থাকবেন এই দুই ব্যক্তি। মালদার তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার খুনে মোট সাতজন অভিযুক্তকে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে অন্যতম একজন অমিত রজক। তাঁর কাছ থেকে একটি মোবাইল উদ্ধার হয়েছে।


এই মোবাইলে একাধিক টেলি কনফারেন্স হয়েছিল বলে পুলিশ সূত্রে খবর। হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটও হয়েছিল বেশ কয়েকটি। এর মধ্যে বেশ কিছু চ্যাট ডিলিটও করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এই চ্যাটগুলিকে পুলিশ তিনটি ভাগে ভাগ করেছে। দুলাল সরকার খুনের আগে, খুনের দিন এবং খুনের পরের চ্যাট। ডিলিট হওয়া হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট রিট্রিভ করার জন্য এবং ডিজিটাল তথ্য সংগ্রহের জন্য ফোন ফরেন্সিক পরীক্ষা নিরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। এর পাশাপাশি জানা গিয়েছ, যে ৫০ লক্ষ টাকা সুপারি দেওয়া হয়েছিল তা দু'ভাগে শার্প শুটারদের দেওয়া হয়েছিল। প্রথম দফায় খুনে আগে, তারপর খুন করার পরে। পুলিশ সূত্রে এমনটাই দাবি করা হয়েছে।