শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: ২০২১ । সময়টা বিধানসভা নির্বাচনের ( West Bengal Assembly Poll )  প্রাক্কাল। একটা সময় সকাল-বিকেল একের পর এক তৃণমূল ( TMC )  নেতার গলায় শোনা যাচ্ছিল বেসুরো বচন। পার্টি নিয়ে অনেক ক্ষোভ বিক্ষোভ উঠে আসছিল। লেগেছিল দলবদলের হিড়িক। যদিও বিপুল জয় নিয়ে পার্টির ক্ষমতায় ফেরার পর ছবিটা আমূল বদলেছে। সামনে পঞ্চায়েত ভোট ( Panchayet poll ) । পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলকে চাঙ্গা করতে যখন জেলায় জেলায় ঘুরছেন দলের হেভিওয়েট  নেতারা, তখন এই মন্তব্য কি ইঙ্গিত দিচ্ছেন কোচবিহার তৃণমূলে ঘরোয়া কোন্দলের?


‘দলের পুরনো কর্মীরা ভাল নেই’



ফেসবুকে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। পঞ্চায়েত ভোটের আগে ফেসবুক পোস্ট রাজ্য তৃণমূলের সহসভাপতির। লিখলেন , ‘দলের পুরনো কর্মীরা ভাল নেই’। উত্তরবঙ্গের এই হেভিওয়েট নেতার পেজে এমন পোস্টে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। তবে কি পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলের অন্দরে সিঁধ কেটে ঢুকে পড়েছে অন্তর্কলহ? 


আরও পড়ুন : 


কলকাতা মেডিক্যালে তুলকালাম, হাইকোর্টে মামলা


রবীন্দ্রনাথ ও উদয়নের ভিন্ন সুর 
এর আগেও কিছু ঘটনা দলের মধ্যে দুরকম সুর প্রকাশ্যে এনেছিল। অক্টোবরের মাঝামাঝির ঘটনা। ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলের পদক্ষেপে কিছুটা ভুল হয়েছিল বলে  কোচবিহারে তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে অকপট স্বীকারোক্তি করেন উদয়ন গুহ। যদিও একই মঞ্চে দাঁড়িয়ে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ দাবি করেন, গত পঞ্চায়েত ভোটে কোনও অশান্তিই হয়নি। উল্টে ১৯-এর লোকসভা ভোটে খারাপ ফলের জন্য দলেরই একাংশকে দায়ী করেন তিনি। যা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। তিনি তখন বলেন, 'আমি যখন সভাপতি ছিলাম কারও মাথা ফাটেনি, কোমর ভাঙতে হয়নি।' উদয়ন গুহর পরই বক্তব্য রাখতে ওঠেন কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান ও তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, ২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটে অশান্তির কথা না মানলেও, ১৯-এর লোকসভা ভোটে খারাপ ফলের জন্য মঞ্চে উপস্থিত দলেরই নেতাদের একাংশকে নিশানা করেন তিনি। তিনি বলেন, ' পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেউ কেউ আমাদের নির্দল প্রার্থী দিয়ে হারিয়েছে। ১৯-এর লোকসভা নির্বাচন, যেখানে জয় নিশ্চিত ছিল, সেখানে কিছg লোক পিছন থেকে দলকে ছুরি মেরে হারিয়েছে, এবং তাঁরা আজ এই মঞ্চে আছেন।' 



২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে অশান্ত হয়ে উঠেছিল রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত! একছত্রভাবে জয় পেয়েছিল তৃণমূল। কোচবিহারে ১২৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে শাসকদলের দখলে গেছিলেন ১২৬টি। এবার পঞ্চায়েত ভোটের আগে  প্রবীণ নেতার এই বেসুরো ভাব দলীয় ঐক্যে কি ফাটল ধরাবে ?