কলকাতা : লোকসভা নির্বাচনের সময় নিজেকে ডায়মন্ডহারবার কেন্দ্রেই সীমাবদ্ধ রাখতে চান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে এই দাবি করার পরে, রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে গেছে। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হয়েও কেন এমন চিন্তাভাবনা? কী এমন ঘটল? এই নিয়ে উঠে আসছে একাধিক মতামত। এরই মধ্যে মুখ খুললেন, তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী।
বছরের প্রথম দিন, তৃণমূলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ঠিক তার আগে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে দাবি, আসন্ন নির্বাচনে নিজেকে ডায়মন্ডহারবারেই সীমাবদ্ধ রাখতে চান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। দলের সাংগঠনিক বা নীতি নির্ধারণ সংক্রান্ত কোনও বিষয়েও জড়াতে চান না! রাজনৈতিক মহলে চর্চার বিষয়, তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের সঙ্গে কোনও বিষয়ে মতবিরোধের কারণেই কি অভিমানী অভিষেক?
১ জানুয়ারি তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী জানালেন, 'এই নির্বাচনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যদি লড়াই করেন, নিশ্চিতভাবেই তিনি লড়াইয়ের ময়দান থেকে পিছিয়ে যাবেন না। যদি লড়াই করেন, তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখেই তিনি লড়াই করবেন। জোড়াফুলকে সামনে রেখেই তিনি লড়াই করবেন, এই বিষয়ে আমি নিশ্চিত'
তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা দিবসের সকালে সোশাল মিডিয়ায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পোস্ট করেন। লেখেন, নব উদ্যমে আগামী লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হন, ক্লেদ, বিষাদ, গ্লানি মুছে যাক। একসঙ্গে সততা ও সংহতির সঙ্গে দেশের সেবায় নিয়োজিত থাকব।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের ঘনিষ্ঠমহল সূত্রের দাবি, সম্প্রতি, কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগে আন্দোলনকে স্তিমিত করা, রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পের বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকারি আধিকারিকদের একাংশের ঔদাসীন্য, এবং সে সব নিয়ে দলের অন্দরে কথা বলেও কোনও লাভ না হওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাজ্যব্যাপী জনসংযোগ যাত্রা, কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগে দিল্লিতে আন্দোলন, কলকাতায় রাজভবনের সামনে ধর্না - সবকিছুর নেতৃত্বে ছিলেন অভিষেকই! সম্প্রতি, বঞ্চনার অভিযোগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময়েও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে অভিষেক ছিলেন প্রতিনিধি দলে। বিজেপি বিরোধী 'INDIA' জোটের বৈঠকেও অভিষেককে নিয়ে গিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। তৃণমূলের তরফে সেই জোটের সমন্বয় কমিটিতে সদস্যও অভিষেক। এখন সামনে যখন লোকসভা নির্বাচন, বিজেপি যখন বাংলায় ৩৫ আসন জয়ের লক্ষ্য নিয়ে ময়দানে নামার তোড়জোড় শুরু করেছে, ঠিক সেই সময়, বাংলায় অভিষেক নিজেকে ডায়মন্ডহারবারেই সীমাবদ্ধ রাখতে চান বলে - তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে দাবি করায়, জল্পনার ঝড় উঠেছে।