শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার  : নবীন-প্রবীণ ইস্যু যেন পিছু ছাড়ছে না তৃণমূলের। মেখলিগঞ্জের সভায় এবার ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য শোনা গেল উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহর মুখে। সভা থেকে তাঁর বার্তা, শাশুড়িরা বয়সের কারণে কর্মক্ষমতা হারালে বউমাদের হাতে সংসারের চাবি তুলে দেন। দিনহাটার তৃণমূল বিধায়কের বক্তব্য, দলের শাশুড়িদেরও উচিত নতুনদের হাতে চাবি তুলে দেওয়া।    


 আদি-নব্যের লড়াই


বহুদিন থেকেই থেকেই তৃণমূলে আদি-নব্যের লড়াই চলছে। গত লোকসভা নির্বাচনের আগে সেই  নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্বে  কার্যত আড়াআড়ি বিভাজন দেখা যায় শাসকদলে। কখনও সরাসরি আক্রমণ, কখনও পরোক্ষ বাণ। ১৯৯৮-এ কংগ্রেস ভাঙিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস তৈরি করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময় তাঁর সঙ্গীরা বরাবর মমতাকেই তাঁদের নেত্রী বলে মেনেছেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেওয়ার পর, তৃণমূলের শাখা সংগঠনে দেখা যায় একঝাঁক নতুন মুখ। তারপর থেকেই রাজ্যের শাসকদলের অন্দরে ওল্ড গার্ড বনাম ইয়ং ব্রিগেডের তরজা চরমে ওঠে । 


হালফিলে একাধিকবার অভিষের বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেপুটি সিএম করার দাবিও তোলেন তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। । অভিষেককে সরকারের চেয়ে খোলাখুলি সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন দলের একাংশ। হুমায়ুন কবীব নন। সম্প্রতি অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের হয়ে সওয়াল করতে শোনা গেছে সৌগত রায়কেও। আর এই আবহেই এবার ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন উদয়ন। 


বললেন, 'শাশুড়ি আঁচলের থেকে চাবি খুলে বউয়ের হাতে দিয়ে বলে, সংসারের দায়িত্ব তোমরা নাও। শাশুড়ি তো একথা বলে না, আমরা বিয়ে করে আগে এসেছি, তোমরা পরে এসেছো, তোমার দেওয়ানিগিরি চলবে না, দেওয়ানিগিরি আমাদের চলবে। শাশুড়ি যখন বোঝে, আমার কোমরের জোর কমে গেছে, আমি ভাল করে হাঁটতে পারি না, আমার কোমরের জোর নেই, তখন স্বেচ্ছায় শাশুড়ির ওই চাবিটা বউয়ের হাতে দেয়। এই রকম যত শাশুড়ি আছে আমার দলের ভিতরে, সবার উচিত চাবি আমাদের বাড়ির সবচেয়ে নতুন বউ, অভিজিৎ দে ভৌমিকের আঁচলে বেঁধে দেওয়া। তা যদি করে, দলটা শক্তিশালী হবে, সংসারে শান্তি থাকবে।' 


এই কথা বলে উদয়ন কি আরও কিছু বোঝাতে চাইলেন ? তৃণমূলে যেখানে নবীন - প্রবীণ দ্বন্দ্ব মাঝে মাঝেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে, সেখানে উদয়নের এমন মন্তব্যে প্রশ্ন উঠছে।  


আরও পড়ুন :


এবার বাজেটে বড় প্রাপ্তি মহিলাদের? ভরবে মধ্যবিত্তের মনও? মহালক্ষ্মীকে স্মরণ করে বড় বার্তা মোদির