কলকাতা: সরাসরি কারও নাম না করলেও, ফের বিচারব্যবস্থার একাংশের ভূমিকা নিয়ে মুখ খুলল তৃণমূল (TMC)। দলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) কলকাতা হাইকোর্টের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও (Mamata Banerjee) প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন যে, শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর করা যাবে না কেন।
শহিদ মিনার চত্বরে সভা ছিল অভিষেকের, মমতার ধর্নামঞ্চ অম্বেডকর মূর্তির সামনে
কলকাতায় এ দিনে তৃণমূলের মেগা ইভেন্ট ছিল। একদিকে, শহিদ মিনার চত্বরে সভা করেন অভিষেক। অন্য দিকে, অম্বেডকর মূর্তির সামনে ধর্নায় বসেন মমতা। নিজের সভার পর মমতার ধর্নামঞ্চেও পৌঁছন অভিষেক। সেখানে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত থেকে তাঁর সভার অনুমতি নিয়ে আইনি জটিলতা ছুঁয়ে যান অভিষেক। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিদের একাংশের ভূমিকায় প্রশ্ন তোলেন। বিজেপি এবং তৃণমূলের জন্য আলাদা আইন হবে কেন, জানতে চান।
এ দিন অভিষেক বলেন, "আদালতের রায় নিয়ে আমার মতামত জানাতে জনসমক্ষে জানাতে পারি আমি। তা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের এক বিচারপতি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে বলেছেন, তৃণমূলের সদস্যতা খারিজ করে দেবেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে রুল জারি করে ডেকে পাঠাতেন।"
অভিষেক বলে চলেন, "আমি আমার মতামত জানাতে পারি। সংবিধান অনুযায়ী নিজে মতামত জানানো যায়। তাতে বলছেন, রুল জারি করে ডেকে পাঠাবেন। আমি ওই বিচারপতিকে প্রশ্ন করতে চাই, দু'দিন আগে কেন্দ্রের মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু বলেছেন, 'সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতিরা দেশবিরোধী'। আপনার ক্ষমতা আছে আইন প্রয়োগ করে কিরেণ রিজিজুকে ডেকে পাঠানোর?"
তিনি তৃণমূল করেন বলে, তাঁর জন্য এক আইন, বিজেপি-র লোকেদের জন্য অন্য আইন কেন হবে, এই প্রশ্নও তোলেন অভিষেক। তাঁর কথায়, "নিয়ম আমার জন্য যা, কিরেণ রিজুজুর জন্যও তা-ই হওয়া উচিত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য যা নিয়ম, নরেন্দ্র মোদির জন্যও তা-ই হবে। এই সংবিধান বাবাসাহেব অম্বেডকর তৈরি করে গিয়েছিলেন। দেশের দার্শনিক নেতারা প্রাণ দিয়ে রক্ষা করে গিয়েছেন এই দেশের সংবিধান।"
এ দিন মমতাও বিচারব্যবস্থার একাংশের ভূমিকা নিয়ে মুখ খোলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, "হাইকোর্টের কোনও এক বিচারপতি রায় দিয়ে রেখেছেব, কোনও এক গদ্দারের বিরুদ্ধে এফআইআর করা যাবে না। সে মার্ডার কেস হলেও, হবে না। চুরি, ডাকাতি, ফৌজদারি, অপরাধ হলেও, করা যাবে বা। এ আবার কী!"
অভিষেক বা মমতা, কেউই যদিও সরাসরি কারও নাম মুখে আনেননি
এ দিন অভিষেক বা মমতা, কেউই যদিও সরাসরি কারও নাম মুখে আনেননি। তবে এবিপি আনন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ থেকে তৃণূমূল, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সবকিছু ছুঁয়ে গিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।