কৃষ্ণেন্দু অধিকারী ও দীপক ঘোষ, কলকাতা : কালীপুজোর আবহে কার্যত বোমা ফাটালেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। সোশাল মিডিয়ায় একটি চাঞ্চল্যকর পোস্টে তিনি লিখেছেন, "জ্যোতি বসুর মুখ্যমন্ত্রিত্বের রেকর্ড ভেঙে দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০৩৬ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী তিনিই।" তাঁর আরও দাবি, ২০৩৬ সালের আশপাশে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে কুণাল ঘোষের এমন ভবিষ্যদ্বাণী নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। 

Continues below advertisement

শিয়রে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে, ভোট-গন্ধে ম ম করছে কালীপুজোর আকাশও। খাতায় কলমে এ রাজ্যে শব্দবাজি নিষিদ্ধ হলেও, পুজোর আবহে কার্যত বড়সড় বোমা ফাটালেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তবে এ বোমা যে সে বোমা নয়, এক কথায় ভোটের ভবিষ্যদ্বাণী। সোমবার, সোশাল মিডিয়ায় কুণাল ঘোষ চাঞ্চল্যকর পোস্টে লিখেছেন, জ্যোতি বসুর মুখ্যমন্ত্রিত্বের রেকর্ড ভেঙে দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০৩৬ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী তিনিই। কুণালের কথায়, "আমি একজন তৃণমূল কর্মী বা আমি একজন রাজনৈতিক সচেতন নাগরিক হিসেবে আমার যেটা পর্যবেক্ষণ আমি সেটা লিখেছি যে জ্যোতি বসুর মুখ্যমন্ত্রিত্বের রেকর্ড ভেঙে দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০৩৬ অবধি চোখ বুজে মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ! জ্যোতিবাবুর রেকর্ড ভেঙে যাবে, যদি না তার আগে ২০২৯-এ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লির বৃহত্তর দায়িত্ব পালন করতে হয়। চতুর্থ মা মাটি মানুষের সরকার হবে। বেশি বিধায়ক নিয়ে হবে।"

 

Continues below advertisement

শুধু মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় কতদিন মুখ্য়মন্ত্রী থাকবেন, তা নিয়েই ভবিষ্য়দ্বাণী করা নয়, অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় কবে মুখ্য়মন্ত্রী হবেন তাও কার্যত ভবিষ্য়ৎদ্রষ্টার মতো বলে দিয়েছেন কুণাল ঘোষ। তাঁর মতে, "ওই সময়টার আগেপরে থেকে তাঁর আশীর্বাদে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্যমন্ত্রিত্ব শুরু (এর মধ্যে ২০২৯-এ যদি মমতাদি প্রধানমন্ত্রী হন, তাহলে আলাদা কথা)। বিরোধীরা মিডিয়া, সোশ্যাল মিডিয়াতেই থাকুন। তৃণমূল নবান্নে সুন্দর, বিরোধীরা ফেসবুকে।"

রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন হল, কুণাল ঘোষের এই মন্তব্য় কি নিছকই বিরোধীদের উদ্দেশে ? না কি তৃণমূলের অভ্য়ন্তরীণ সমীকরণের কোনও ছাপও তাঁর এই মন্তব্য়ের মধ্য়ে আছে ?

এ প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "কুণাল ঘোষের সমস্ত মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া দেওয়া কী সম্ভব ? না দেওয়া সমীচিন ? একজন তাঁর দলের মধ্যে টিআরপি বাড়াতে চাইছেন। গ্রহণ-যোগ্যতা বাড়াতে চাইছেন। তারজন্য তিনি সংবাদমাধ্যমে একটা বিবৃতি দিচ্ছেন। কিন্তু,সমাজ কি সেটা গ্রহণ করছে ? সমাজ সেটায় আলোচনায় অংশগ্রহণ করছে ? বিষয়টা এরকম নয়। তৃণমূল চলে গেছে, তৃণমূল চলে যাচ্ছে। তৃণমূলের এই বিদায়বেলায় কেউ যদি বিবৃতি দিয়ে শান্তি পান বা কাউকে খুশি করতে পারেন...ভাল।"

১৯৭৭ থেকে ২০০০। টানা ২৩ বছর, মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে নজির গড়েছিলেন জ্যোতি বসু। ২০০০ সালে মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়েন তিনি। ব্যাটন ধরেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ২০১১ সাল থেকে শুরু করে প্রায় ১৫ বছর মুখ্যমন্ত্রী পদে রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

কুণাল ঘোষের ভোটবচন সফল হতে গেলে আরও দু'টি মেয়াদ তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকতে হবে। এখন তা হবে কি, হবে না, তা  ঠিক করবেন ভোটাররা !