কলকাতা: ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি বিজেপি-তে যোগ দিতে চেয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই নিয়ে গতকাল থেকে কাটাছেঁড়া চলছে। তৃণমূলের তরফে পাল্টা বয়ানও দেওয়া হয়েছে। যাঁকে ঘিরে অভিযোগ, কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র তথা রাজ্যের হেভিওয়েট বিধায়ক, সেই অতীন ঘোষ এবার মুখ খুললেন। জানিয়ে দিলেন, তৃণমূল ছেড়ে চলে যাওয়ার পর একদিনের জন্য়ও শুভেন্দুর সঙ্গে যোগাযোগ করেননি তিনি। (Atin Ghosh)
একদিন আগে অতীনকে নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করেন শুভেন্দু। দাবি করেন, ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি-তে আসতে চেয়েছিলেন অতীন। কাশীপুর-বেলগাছিয়ায় তৃণমূল টিকিট না দিলে, বিজেপি-র হয়ে লড়তেও চেয়েছিলেন। অতীনের সঙ্গে কলকাতায় তৃণমূলের আরও কয়েক জন নেতাও তাঁর কাছে বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন বলে দাবি করেন শুভেন্দু। (Suvendu Adhikari)
শুভেন্দুর ওই দাবি ঘিরে শোরগোল পড়ে যায় তৃণমূলের অন্দরেও। সেই আবহে শনিবার মুখ খুললেন অতীন। তাঁর বক্তব্য, "শুভেন্দু অধিকারী দলে যতদিন ছিলেন, ততদিন যোগাযোগ ছিল। তার পর একদিনের জন্য়ও কথা বলিনি। একথা সত্য যে, যখন যখন ছাড়ব ছাড়ব করছিলেন উনি, সেই সময় বলেছিলাম, ওঁকে আটকাতে তৎপর হওয়া উচিত দলের। সেকথা কাগজেও বেরিয়েছিল।" শুভেন্দুর অভিযোগ বিভ্রান্তিকর বলে মন্তব্য করেন অতীন। ২০২১ সালের কথা এখন টেনে কার স্বার্থ রক্ষা করতে চাইছেন শুভেন্দু, প্রশ্ন তোলেন তিনি।
ঘটনাচক্রে এদিনই বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেন তৃণমূল ঘোষ। তাঁর বক্তব্য ছিল, "এ নিয়ে কোনও মন্তব্য নেই। বিরোধী দলনেতা এবং অতীন ঘোষের মধ্যে ঢুকব না। বিরোধী দলনেতা যদি বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করেন, বিষয়টি নিয়ে পরিষ্কার বাবে কথা বলা উচিত অতীন ঘোষের।" দলের আর এক নেতা শান্তনু ঘোষ সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, 'আমরা চাই, অতীন ঘোষ এর প্রতিবাদ করুন এবং সাংবাদিক সম্মেলন করে অস্বীকার করুন। বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করুন অতীন। শুভেন্দু নির্দিষ্ট জায়গার কথাও উল্লেখ করেছিলেন। আমি বিশ্বাস করি, এই অভিযোগ মিথ্যা।
উনি মামলা করলে আমরা পাশে থাকব'।"
আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় এখনও উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। সেই আবহেই ছয় কেন্দ্রে বিধানসভা উপনির্বাচন হতে চলেছে। সেই আবহে অতীনের বিরুদ্ধে শুভেন্দুর অভিযোগ ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, শুভেন্দু দাবি করেছেন, রাত দখলের সময় আর জি করে ভাঙচুরের ঘটনায় অতীন যুক্ত ছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই তিনি এই কাজ করান। সিবিআই অতীনকে ডাকলেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাবে এমনকি মমতাকেও ডাকা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন শুভেন্দু। সেই নিয়ে জোর তরজা রাজ্য রাজনীতিতে।