রাজীব চৌধুরী, উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় ও অর্ণব মুখোপাধ্যায়: শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) অভিযোগের জবাবে পাল্টা নবগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক কানাই মণ্ডলের হুঁশিয়ারি (Kanai Mondal)। জানিয়ে দিলেন, তিন দিনের মধ্য়ে টাকার বিনিময়ে দলবদলের মন্তব্য প্রত্য়াহার না করলে, মানহানি মামলার নোটিস পাঠাবেন। যদিও মন্তব্য প্রত্যাহার করবেন না বলে জানিয়েছেন শুভেন্দু।


মঙ্গলবার একটি সভায় কানাইকে কেনা হয়েছিল বলে শোরগোল ফেলে দেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, "কানাই মণ্ডলকে বলব, আপনি আমার কাছ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা নিয়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। আর এনায়েতের কাছ থেকে একটা স্করপিও গাড়ি।"  কিন্তু শুভেন্দুর বক্তব্যের পাল্টা কানাই বলেন, "তিনি যদি টাকা দিয়ে থাকেন, তাঁকে প্রমাণ করতে হবে। এ সমস্ত মিথ্যাচারের জবাব দিতে হবে তাঁকে।"


শুভেন্দুর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করবেন বলেও অভিযোগ করেন কানাই। বলেন, "যদি তিন দিনের মধ্যে ক্ষমা না চান, ওঁর বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করা হবে।"


'ভাত ছড়ালে কাকের অভাব হয় না', —এই আপ্তবাক্যটা এ দেশের রাজনীতির অভিভাবকেরা ভালেই রপ্ত করে ফেলেছেন। এর সঙ্গে নতুন যুক্ত হল, কী ছড়ালে বিধায়ক ভাঙাতে অসুবিধা হয় না, তা নিয়ে একদা তৃণমূলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা শুভেন্দু, যিনি বর্তমানে রাজ্য় বিজেপি-র অন্য়তম শীর্ষনেতা এবং বিরোধী দলনেতাও, তাঁর সঙ্গে একদা সিপিএম নেতা, পরে সিপিএম থেকে তৃণমূলে যোগ দিয়ে, এখন তৃণমূল বিধায়ক, কানাইয়ের জোর বাগযুদ্ধ।


কানাইয়ের বক্তব্য, "আমি ওঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার জন্য় প্রস্তুতি নিচ্ছি। এবং আমি আজকেই হাইকোর্টের উকিলের সঙ্গে কথা বলেছি। কতবড় মিথ্য়াবাদী, সেটা প্রমাণ করে দেব। ...উনি আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন। এবং সমাজে আমাকে কলুষিত করার চেষ্টা করেছেন।"


কিন্তু মন্তব্য তিনি প্রত্যাহার করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন শুভেন্দু। তাঁর বক্তব্য,  প্রত্য়াহার করব না। উনি যা পারেন করে নেন। আমি যা জানি, আর এগোবেন না কানাইবাবু। এর পরে জমি দখলেরটা বলে দেব। কাগজ আছে আমার কাছে। ভদ্রভাবে রাজনীতি করুন। আপনি সিপিএম-Sর নেতা-এমএলএ ছিলেন। আপনাকে কেনা হয়েছে তৃণমূলে। আমাকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিল, 'কিনে আন এমএলএ'। আমি কিনে এনেছিলাম। এর পরে যে মুখ খুলবে, তার মুখ আমি খুলে দেব।"

আর এই বাগযুদ্ধেই উঠে এসেছে আরও একটি নাম মহম্মদ এনায়েতুল্লার, যিনিও একসময় সিপিএম-এ ছিলেন, পরে তৃণমূলে যোগ দেন। শুভেন্দু তাঁর বিরুদ্ধে গাড়ি দেওয়ার অভিযোগ করেছেন। কিন্তু তিনি তা অস্বীকার করেছেন। এনায়েত বলেন, "কাকা-কাকিমার কাছ থেকে ধার নিয়ে আমার সুন্দর মনে পড়ছে, প্রচুর ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ফাইনান্সে একটা গাড়ি কেনেন। সেই গাড়িটার কিস্তি কয়েকদিন আগে শোধ হল। ৪-৫ বছর চলল কিস্তি। সেই কিস্তির ডকুমেন্ট সব আছে। কে কী বলছে, বাস্তব নাই, ভিত্তিহীন।"

দলবদলে লক্ষ লক্ষ টাকা, দামি গাড়ি,নএসব শুনে সিপিএম ইডি তদন্তে দাবি করেছে। কিন্তু এর পরও কি আদৌ কোনও দিন দলবদল বন্ধ হবে?, অনিশ্চিত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।