সমীরণ পাল, কলকাতা: কুণাল ঘোষ, সৌগত রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের পর এবার নারায়ণ গোস্বামী। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে ব্যাট ধরলেন আরও এক তৃণমূল নেতা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর অভিষেকই মুখ্যমন্ত্রী বলে যদিও ঘোষণা করেননি নারায়ণ। তবে জানিয়ে দিলেন,  ভবিষ্যতের তৃণমূল নেতার নাম অভিষেক। তৃণমূলের একের পর এক বর্ষীয়ান সাংসদ, বিধায়ক, নেতারা যেভাবে অভিষেকের হয়ে ব্য়াট ধরছেন, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। (Abhishek Banerjee)


অশোকনগরের তৃণমূল বিধায়ক নারায়ণ অভিষেকের হয়ে সওয়াল করতে গিয়ে বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংগ্রামের অপর নাম। দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও ১০০ শতাংশ তাঁকে নেত্রী মনে করেন। এ নিয়ে কোনও সন্দেহ, দ্বিমত নেই। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর তৃণমূলের ভবিষ্যৎ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেত্রী, তা নিয়ে যেমন দ্বন্দ্ব নেই, তেমনই অভিষেক ভবিষ্যতের নেতা। মুখ্যমন্ত্রী হবেন কি না, সেটা পরবর্তী প্রশ্ন, পরিস্থিতি কথা বলবে। কিন্তু ভবিষ্যতের তৃণমূল নেতার নাম অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।" (Narayan Goswami)


দলের একের পর এক নেতারা অভিষেকের হয়ে ব্যাট ধরায় রাজ্য রাজনীতি এখন সরগরম। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল নেতাদের এমন অবস্থান নেহাত কাকতালীয় নয় বলে মনে করছেন অনেকে। একসময় রাজনীতিতে নেতাদের বয়সের পক্ষে সওয়াল করা অভিষেক, যিনি লোকসভা নির্বাচনে প্রবীণ নেতাদের হয়ে প্রচারেও যাননি, তাঁর হয়ে সমস্বরে সকলে  সওয়াল করতে শুরু করলেন কেন, উঠছে প্রশ্ন। 

সম্প্রতি অভিষেক নিয়ে প্রথম প্রশস্তি করতে দেখা যায় কুণাল ঘোষks। অল্প সময়ের মধ্যে অভিষেক যেভাবে নিজেকে তৈরি করেছেন, দলের সংগঠনে তাঁর যে ভূমিকা, তাকে দরাজ সার্টিফিকেট দেন কুণাল। অভিষেককে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে লেখেন, 'মমতাদিকে দীর্ঘদিন দেখেছি, অভিষেককেও দেখছি। দ্রুত আরও পরিণত। আবেগের সঙ্গে মিশছে আধুনিক পদ্ধতি, প্রযুক্তি। আরও ধারাল হচ্ছে অভিষেক। সময়ের নিয়মে মমতাদির পর একদিন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হবে। মমতাদির ঘরানার সময়োপযোগী ধারক ও বাহক'।


এর পর মুখ খোলেন সৌগত। তাঁর বক্তব্য ছিল, "অভিষেকই তো মমতার উত্তরাধিকারী! অভিষেক আগে দায়িত্ব নিয়ে ভাল কাজ করেছে। সেই জন্যই ওকে দায়িত্ব দেওয়া উচিত। দলটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৈরি করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যাঁর উপর বিশ্বাস থাকবে, তাঁরই সাংগঠনিক দায়িত্বে থাকা উচিত। অভিষেক পঞ্চায়েতের আগে যে জনজোয়ার কর্মসূচি করেছিল, তাতে যুবকরা আসেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনে বেটার প্রার্থী পেয়েছিলাম আমরা। ফলাফলও ভাল হয়েছিল তুলনামূলক। আবার সেটা শুরু করলে ফল ভাল হবে।"


এক সময়, তৃণমূলে বিভাজনের খবর যখন তুঙ্গে, সেই সময় মমতা ছাড়া কাউকে নেতা মানেন না বলে মন্তব্য করে শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন কল্যাণ। কিন্তু তিনিও অভিষেকের ভূয়সী প্রশংসা করছেন আজকাল। অভিষেক ভাল কাজ করছেন, আগামী দিনে যে তিনি প্রশাসনের মাথায় বসবেন, তা নিয়ে কোনও দ্বিধা নেই বলে মন্তব্য করেন। একযোগে সকলে অভিষেক প্রশস্তিতে নামলেন কেন, সেই নিয়ে বাড়ছে জল্পনা।