পার্থপ্রতিম ঘোষ, বিটন চক্রবর্তী ও দীপক ঘোষ , পূর্ব বর্ধমান : ' বীরভূমের পর মুর্শিদাবাদ, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া সব পেরিয়ে পাচার হয় বিভিন্ন জায়গায়, সেই সব জেলার প্রশাসন-পুলিশ, সমস্ত রাজনৈতিক নেতা সমস্ত ব্যাপারগুলো হয়ে তো এগুলো হয় '
'পাচার নিয়ে অকপট
গরু পাচার ( Cow Smuggling ) মামলা ঘিরে যখন তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি, তখনই এই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন খোদ তৃণমূলেরই দাপুটে বিধায়ক শেখ শাহনওয়াজ। আর ভৌগোলিক অবস্থান অনুযায়ী তিনি পূর্ব বর্ধমানের বিধায়ক ( East Burdean MLA) হলেও, কয়েকদিন আগে পর্যন্ত তাঁর বিধানসভা কেন্দ্র কেতুগ্রামের তৃণমূলের দায়িত্বে ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল! আর সেই দাপুটে তৃণমূল নেতাই গরু পাচার নিয়ে অকপট।
' পশ্চিমবঙ্গে তো এই প্রথম হয়নি?'
তিনি আরও বলেন, ' গরু পাচার তো সারা পশ্চিমবঙ্গে তো এই প্রথম হয়নি? হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। যেখানে যেখানে হচ্ছে, তার যে নির্দিষ্ট প্রমাণপত্র থাকলে, সেই প্রমাণপত্র অনুযায়ী আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা হবে। কীভাবে হয়েছে সেটা সমস্ত তদন্ত হবে, তদন্ত আইন অনুযায়ী হবে, বেআইনি কাজ যেটা হবে, সেটা নিঃসন্দেহে বন্ধ হওয়া দরকার'
জেলে রয়েছেন অনুব্রত
গরুপাচার মামলায় CBI’এর হাতে গ্রেফতার হয়ে আপাতত আসানসোল জেলে রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। সূত্রের দাবি, ইতিমধ্যে বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা, তাঁর পরিবার ও ঘনিষ্ঠদের নামে ১৬২টি রেজিস্টার্ড সম্পত্তি চিহ্নিত করা হয়েছে। এবার সিবিআইয়ের স্ক্যানারে বুধবারের তল্লাশিতে খোঁজ মেলা আরও ১০০টির বেশি সম্পত্তি। বুধবার দফায় দফায় কখনও অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ বোলপুর পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর বিশ্বজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়। বোলপুরের তৃণমূল কর্মী সুদীপ রায় , উকিল পট্টির বাসিন্দা আরেক অনুব্রত ঘনিষ্ঠ সুজিত দে’র বাড়িতে তল্লাশি চালায় CBI। দু’দফায় তল্লাশি চালানো হয়, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ও অনুব্রতর হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারির বোলপুরের বাড়ি ও অফিসে। এই প্রেক্ষাপটে CBI সূত্রে খবর, বুধবার তল্লাশি চালিয়ে ১০০টির বেশি বেনামি সম্পত্তির নথি মিলেছে।
সেই সম্পত্তির মালিক কি অনুব্রত মণ্ডল? খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে গরু পাচার মামলায় ধৃত অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের জেল হেফাজতের মেয়াদ বৃহস্পতিবার আরও ১৪ দিনের জন্য বাড়িয়েছে আদালত। ১৫ সেপ্টেম্বর ফের আদালতে পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাকে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা নাগাদ আসানসোল জেল থেকে সিবিআই আদালতে আনা হয় সায়গলকে। এক প্রবীণ আইনজীবীর মৃত্যু হওয়ায় বৃহস্পতিবার আদালতে কর্মবিরতি চলায়, কোনও শুনানি হয়নি। সায়গলকে আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী।