সমীরণ পাল, কলকাতা: দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তোলপাড়ের মধ্যে দলের পাশেই ছিলেন। এমনকি সাংসদ জহর সরকারকেও দু'কথা শুনিয়ে ছাড়েন। তার পরই অন্য সুর বরাহনগরের তৃণমূল (TMC) বিধায়ক তাপস রায়ের (Tapas Roy) গলায়। রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন তিনি। রাজনীতি, সামাজিক কাজ, সব থেকেই অবসর নিতে চান বলে জানালেন তিনি।
রাজনীতি ছাড়তে চান তাপস রায়
রবিবার বরাহনগরের একটি অনুষ্ঠানে একটি অনুষ্ঠানে এমনই মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে তাপসকে। তিনি বলেন, "আর কয়েকটা বছর হয়ত। বেশিদিন সমাজকর্মী বা রাজনৈতিক কর্মী থাকার ইচ্ছা নেই আমার, থাকবও মা। গত নির্বাচনেই দলকে জানিয়েছিলাম। আগেও জানিয়েছি দলতে, যে দল ছেড়ে দিতে চাই। আমাকে ধরে রাথা কঠিন।" এসেছিলেন তিনি। তার দু'দিনের মাথাতেই রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেওয়ার কথা
তাপসের মন্তব্যের ওই ভিডিও ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। তাতে তিনি রাজনীতি ছাড়তে চান শুনে হইচই শুরু হয়। কিছুতেই তাঁকে ছাড়বেন না বলে জানান মানুষ জন। তার মধ্য়েও তাপস বলে যান, "আপনারা ছাড়বেন না। কিন্তু আমি ছাড়ব। আমাকে ধরে রাখা কঠিন। সঠিক সময়ে দলকে জানিয়ে দেব।"
তাপস দলের বর্ষীয়ান নেতা। অভিজ্ঞতাও যথেষ্ঠ। তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে স্বভাবতই জল্পনা শুরু হয়েছে। তবে আজ বলে নয়, বরাবরই ছাড়ার তত্ত্বে তিনি বিশ্বাসী বলে জানান। এবিপি আনন্দকে বলেন, "আজ প্রথম নয়, গত নির্বাচন থেকে বহু কর্মিসভা, জনসভা, সাধারণ আড্ডা, সহকর্মী, বিধায়ক-মন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনায় বলে আসছি আমি। আমার মনে হয়, সবকিছুর যেমন বয়স রয়েছে, তেমন রাজনীতিতেও অবসরের বয়স থাকা উচিত। আমি এটাই মনে করি। জনপ্রতিনিধি মানে মানুষের জন্য কাজ করা। শরীরের ব্যাপারও রয়েছে। তাই যখন পাকাপাকি সিদ্ধান্ত নেব, সর্বোচ্চ নেতৃত্বকে জানিয়ে দেব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে জানাব নিশ্চিত ভাবে।"
তবে তাপসের এই মন্তব্যের পিছনে অন্য় ইঙ্গিতই দেখছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, "তাপস রায় অনেক সিনিয়র লিডার। অনেকদিন ধরে রাজনীতি করছেন। সিদ্ধান্ত উনিই নেবেন। জহর সরকার যেমন অপমানিত বোধ করছেন, রাজনীতিকে যাঁরা পেশা হিসেবে নেননি আশা করব তাঁরাই রিঅ্যাক্ট করছেন। প্রতিক্রিয়া শুভেন্দু অধিকারীর।"
গাভাস্করের তুলনাও টানলেন তাপস রায়
জীবনে তিনি সুনীল গাভাস্করের নীতি মেনে চলেন বলেও জানান তাপস। তাঁর কথায়, "আমি গাভাস্করের বড় ভক্ত। সকলের উচিত ওঁকে অনুসরণ করা। পাঁচ-ছ'টা সেঞ্চুরি হাতে নিয়ে ব্যাট দোলাতে দোলাতে ক্রিজ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। রাজনীতিতেও তেমন হওয়া উচিত। রান থাকতে থাকতে চলে যাওয়া উচিত। তা না হলে নতুন প্রজন্ম জায়গা পাবে কী করে! সময়ে জাগয়া না ছাড়লে সিলেক্টরদের কোপেও পড়তে হবে।"