রাজীব চৌধুরী, মুর্শিদাবাদ: মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে এবার, তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার একাংশের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসেন। রঘুনাথগঞ্জে তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনীতে, বিস্ফোরক মন্তব্য করেন তিনি। যা ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। এদিকে গোটা ঘটনায় কটাক্ষ করতে ছা়ড়েনি বিরোধীরা। অন্যদিকে এ নিয়ে কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেছে তৃণমূল জেলা নেতৃত্ব। মন্তব্য করতে চাননি জঙ্গিপুর পুরসভার চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলাম-ও।
দুয়ারে কড়া নাড়ছে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে, তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চই যেন বারেবারে হয়ে উঠছে একে অপরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরানোর আখড়া। এবারের ঘটনাস্থল মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর। এখানে, তৃণমূল পরিচালিত জঙ্গিপুর পুরসভার একাংশের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসেন। বললেন, 'আমাদের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর ১০০ টাকা পৌঁছয়, ২৫ টাকার কাজ হয়। আমি পুরসভার ভাল করতে গিয়েছিলাম। কিছু নেতা বাধা দিয়েছে। তাই আজ পুরসভার অবস্থা দেখুন ... জেলাশাসকের কাছে গিয়ে আমি ন্যায্য বিচার পাইনি। SDO-কে বারবার বলা সত্ত্বেও তদন্ত করেনি ... কেন জলের কাজ করা হয়নি? সূত্রের খবর, এই দ্বন্দ্বের সূত্রপাত বেশ কিছু মাস আগে। জঙ্গিপুর পুরসভায় মোট আসন ২১টি। তার মধ্যে ১৬টিই রয়েছে তৃণমূলের দখলে। সূত্রের খবর, তৃণমূল পরিচালিত এই পুরসভার চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলামের সঙ্গে বরাবরেরই তিক্ত সম্পর্ক তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসেনের। চলতি বছরে, দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব এমন চরমে পৌঁছোয়, ২৬ জুন মফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন তৃণমূলেরই ৯ কাউন্সিলর। সেই অনাস্থা প্রস্তাবকে সমর্থন জানান ১ কংগ্রেস ও ১ বিজেপি কাউন্সিলর। দুই গোষ্ঠীর ঠান্ডা লড়াই দূর করতে, ৮ জুলাই কলকাতার তৃণমূল ভবনের বৈঠকে জঙ্গিপুর পুরসভার তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি ও সাংগঠনিক পদাধিকারীদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করে রাজ্য নেতৃত্ব। যদিও সেই বৈঠকে গরহাজির থাকেন বিধায়ক-অনুগামীরা। সেবারের মতো, অনাস্থা ঠেকানো গেলেও, ৩ মাস পর ফের মাথা চাড়া দিয়েছে কোন্দল। এই প্রেক্ষাপটেই বিস্ফোরক তৃণমূল বিধায়ক। তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব অস্ত্র তুলে দিয়েছে বিরোধীদের হাতে। কংগ্রেস জেলা মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেছেন, 'মনে হচ্ছে, জাকির হোসেন নিজেই এখন দলের কাছে অনেকটা ব্রাত্য। ভাঙনের প্রশ্ন যেটা জাকির হোসেন বলেছেন, সেটা ১০০ শতাংশ সত্য়ি। যে ১০০ টাকা এলে মাত্র ২৫ টাকার কাজ হয়, বাকি ৭৫ টাকা নেতাদের পকেটে চলে যাচ্ছে।' যদিও, এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে, কোনও মন্তব্য করতে চাননি তৃণমূল পরিচালিত জঙ্গিপুর পুরসভার চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলাম। মুখ খুলতে চায়নি জেলা তৃণমূল নেতৃত্বও।