প্রকাশ সিনহা,কলকাতা : অভিনেত্রী নুসরত জাহানকে ( Nusrat Jahan ) তলব করল ইডি (ED)। আগামী মঙ্গলবার সিজিও কমপ্লেক্সে ইডি-র দফতরে হাজিরার নির্দেশ দিতে বলা হয়েছে। ফ্ল্যাট বিক্রিতে প্রতারণাকাণ্ডে তলব করা হয়েছে তৃণমূল সাংসদকে। এছাড়া সেভেন সেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেডের ডিরেক্টর রাকেশ সিংহকেও তলব করেছে ইডি। 



নুসরতের বিরুদ্ধে ২৩ কোটি ৮ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা প্রতারণার অভিযোগ ওঠে। তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, কোটি কোটি টাকা নিয়ে, ফ্ল্যাট না দিয়ে, ওই টাকায় নিজের বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কিনেছেন।  


অভিযোগ, রাজারহাটে বড় ফ্ল্য়াটের প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা নিয়েছিল সংস্থা। সেই ফ্ল্য়াট তো মেলেইনি! যিনি সেই সময় ওই সংস্থার ডিরেক্টর পদে ছিলেন। সেই থেকে অভিযোগের বিচার চেয়ে দরজায় দরজায় ঘুরছেন বয়স্ক মানুষরা। আর যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ,  সেই নুসরত জাহানের বিলাসবহুল ফ্ল্য়াট রয়েছে দক্ষিণ কলকাতার অন্য়তম অভিজাত এলাকা পাম অ্যাভিনিউতে !  সেখানেই ইডেন ইম্পিরিয়াল আবাসনে রয়েছে নুসরত জাহানের বিলাসবহুল ফ্ল্য়াট। নুসরতের আড়াই হাজার স্কোয়ার ফুটের ফ্ল্যাট।  কিন্তু, এই ফ্ল্য়াট কেনার টাকা তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহান কোথা থেকে পেলেন? তা নিয়েই এখন তৈরি হয়েছে বিতর্ক।  নুসরত দাবি করেন, যে সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই সংস্থা থেকেই ঋণ নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, নুসরতের এই ঋণ নেওয়ার দাবি খারিজ করে দিয়েছেন সংস্থার এক ডিরেক্টরই!  


ফ্ল্য়াট নিয়ে প্রতারণার অভিযোগের প্রেক্ষিতে তৃণমূল সংসদ নুসরত জাহান নিজেকে '৩০০ শতাংশ সৎ' বলে দাবি করলেও, কলকাতা পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টই কিন্তু অন্য কথা বলছে। সেই বিস্ফোরক নথি আসে এবিপি আনন্দর হাতে! 


রাজারহাটে জমি কিনে ফ্ল্যাট বানানোর জন্য 'সেভেন সেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড' নামে একটি সংস্থা, ২০১৪-১৫ সালে ৪২৯ জনের থেকে ৫ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা করে নেয়। কিন্তু, সেই ফ্ল্যাট তৈরি হয়নি। এই অভিযোগ নিয়ে আলিপুর আদালতের দ্বারস্থ হন অভিযোগকারীরা। তার প্রেক্ষিতে ২০২২ সালের ২২শে ডিসেম্বর কলকাতা পুলিশের জয়েন্ট সিপি ক্রাইমকে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলেন, আলিপুর আদালতের 6th জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুস্তাক আলম। চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি, আদালতে জমা দেওয়া, গড়িয়াহাট থানার তদন্তকারী অফিসারের রিপোর্টে বলা হয়, প্রাথমিক তদন্তে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে। কলকাতা পুলিশের দেওয়া এই রিপোর্টে অভিযুক্ত হিসাবে নাম ছিল তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহানের। এরপরই, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে  প্রতারণা, বিশ্বাসভঙ্গ, এবং সম্মিলিত অপরাধের ধারায় মামলা হয় এবং আদালতে তরফে সমন জারি করা হয়।


জানা যায়, প্রতারণার শিকার হয়ে প্রথমে থানায় যান ক্রেতারা। অভিযোগ, সেখানে সুরাহা না হওয়ায় ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের দ্বারস্থ হন তাঁরা। কিন্তু, সেখান থেকেও কোনও পদক্ষেপ না করায় আলিপুর আদালতে মামলা করা হয়। তারপর গত অগাস্টেই  এই অভিযোগকারীদের নিয়ে ইডি-র দ্বারস্থ হয় বিজেপি।


এরপর এই মামলার ভবিষ্যত কী? সেদিকে নজর সকলের।