কলকাতা: ফ্ল্যাট প্রতারণাকাণ্ডে আদালতে সশরীরে হাজিরা অভিনেত্রী তথা তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহানের (Nusrat Jahan)। কোটি কোটি টাকা নিয়ে, ফ্ল্যাট না দিয়ে, ওই টাকায় নিজের ফ্ল্যাট কেনার অভিযোগ নুসরতের বিরুদ্ধে। এই মামলায় গত সেপ্টেম্বরে নুসরতকে প্রায় ৬ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। শনিবার সেই মতো সকালে আলিপুর কোর্টে হাজিরা দিলেন নুসরত। আদালতের নির্দেশের পরই হাজিরা দিলেন তিনি। আদালতে নুসরতের সঙ্গে ছিলেন অভিনেতা যশ দাশগুপ্তও। (Yash Dasgupta)


এই মামলায় গত সেপ্টেম্বরে নুসরতকে প্রায় ছয় ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি। নুসরতকে শুরুতে অন্তত একবার হাজিরার নির্দেশ দেয় নিম্ন আদালত। শুরুতেই তাতে আপত্তি জানান নুসরত। নিজে যাবেন না, একজন আইনজীবী তাঁর হয়ে উপস্থিত থাকবেন বলে জানান নুসরত। কিন্তু তাতে রাজি হয়নি আদালত। সশরীরে হাজিরা দিতেই হবে বলে জানানো হয়। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে জাজেস কোর্টে যান নুসরত। যদিও নিম্ন আদালতের নির্দেশই বহাল রাখে জাজেস কোর্ট। নিম্ন আদালতের রায়ে কোনও ভুল নেই বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। আগামী ২৪ জানুয়ারি হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তার আগে, শনিবারই সকাল ১১টায় আলিপুর কোর্টে হাজির হন নুসরত। 


এদিন আদালতে নুসরতের পাশে ছিলেন যশও। যশকে পাশে নিয়েই আদালতে আইনজীবী মারফত বন্ড দেন নুসরত। অর্থাৎ আদালতের নির্দেশ মতোই আলিপুর আদালতে সশরীরে হাজিরা দিতে হল নায়িকাকে। ফ্ল্যাট প্রতারণার অভিযোগে নুসরতের বিরুদ্ধে ED-র কাছে অভিযোগ জানান বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা। আদালতের দ্বারস্থ হন অভিযোগকারীরাও। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে কলকাতা পুলিশ এবং ইডির গোয়েন্দারা।


আরও পড়ুন: Ram Mandir: শাড়িতেই গোটা রামায়ণ, নিপুণ শিল্পকর্ম নিয়ে অযোধ্যার পথে পাড়ি বাংলার তাঁতশিল্পীর


প্রতারিতদের দাবি,  রাজারহাটে ফ্ল্যাট বানানোর জন্য জমি কেনে সেভেন সেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড। ২০১৩-'১৪ সালে ৪২৯ জনের কাছ থেকে ৫ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা করে তোলা হয় বলে অভিযোগ, যার মোট অঙ্ক দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৮০ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকায়। কিন্তু টাকা দেওয়ার পরও গত ন'বছরে কেউ ফ্ল্যাট পাননি, উল্টে তাঁদের টাকায় নুসরত জাহান নিজের ফ্ল্যাট কেনেন বলে অভিযোগ প্রতারিতদের, যাঁদের অধিকাংশই অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ক-কর্মী। (Kolkata News)


যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা প্রতারণার অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছিলেন নুসরত। তাঁর দাবি ছিল,ভেন সেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড সংস্থার থেকে ১ কোটি ১৬ লক্ষ ৩০ হাজার ২৮৫ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন তিনি। ২০১৭ সালের ৬ মে সুদ-সহ সেই ঋণের ১ কোটি ৪০ লক্ষ ৭১ হাজার ৯৯৫ টাকা ফেরতও দেন। ব্যাঙ্কের সব নথিও তাঁর কাছে রয়েছে বলে জানান নুসরত। শুধু তাই নয়, সংস্থার অংশীদার নন তিনি, ২০১৭ সালেই ইস্তফা দিয়েছেন বলে জানান।  যদিও  সংস্থার ডিরেক্টর রাকেশ সিংহ জানান, নুসরতকে কোনও ঋণ দেননি তাঁরা।