কলকাতা: রাজনীতিতে বয়স নিয়ে আলোচনা নতুন নয়। রাজ্য রাজনীতিতেও একাধিক বার বয়সের প্রসঙ্গ উঠেছে। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলের অন্দরে বয়স বেঁধে দেওয়ার পক্ষপাতী ছিলেন। শুধু রাজনীতি বলেই নয়, সব ক্ষেত্রেই বয়সের ঊর্ধ্বসীমা থাকা দরকার বলে মন্তব্য করেছিলেন প্রকাশ্যেই।  বৃহস্পতিবার অভিষেকের জন্মদিনে এবার বয়স নিয়ে মুখ খুললেন দলের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্য়োপাধ্যায়। সদ্য আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্পের উল্লেখ করেছেন তিনি। রাজনীতিতে বয়স তেমন কোনও ব্যাপারই নয় বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। (Kalyan Banerjee)


সম্প্রতি দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে একগুচ্ছ সুপারিশ করেছেন অভিষেক। জেলাস্তর থেকে রাজ্যের পুরসভাগুলিতেও রদবদল ঘটানোর সুপারিশ করেছেন তিনি। দলের তরফে সেই সুপারিশে সিলমোহর পড়েনি এখনও। তবে এদিন অনুগামীদের সঙ্গে জন্মদিন পালন করলেন অভিষেক, সেই সময়ই ট্রাম্পের বয়সের প্রসঙ্গ পাড়লেন কল্যাণ। (Abhishek Banerjee)


সংবাদমাধ্যমে এদিন কল্যাণ বলেন, "ডোনাল্ড ট্রাম্প ৭৮ বছর বয়সে আমেরিকায় জিতেছেন। এটা দেখে আমার মনে হয়েছে, রাজনীতিতে বয়স কোনও ব্যাপার নয়। আন্তর্জাতিক ভোটাভুটি যেহেতু স্পর্শকাতর বিষয়, তাই দলের অবস্থান নিয়ে কিছু বলব না আমি। তবে ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি, মানুষের রায়কে সম্মান জানাতে হবে। রাজনীতিতে বয়স কোনও ফ্যাক্টর নয়। দক্ষতা এবং জনপ্রিয়তাই সব।" যেদিন দলে প্রয়োজন ফুরিয়েছে বুঝবেন, সেদিন বেরিয়ে যাবেন বলেও জানিয়েছেন কল্যাণ।


অনেক আগেই রাজনীতিতে, বিশেষ করে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে বয়স বেঁধে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন অভিষেক।  তাঁর বক্তব্য ছিল, "রাজনীতি হোক বা যে কোনও ক্ষেত্র, আমার মনে হয়, বয়সের ঊর্ধ্বসীমা থাকা দরকার।" অভিষেকের এমন মন্তব্যে তৃণমূলে প্রবীণ বনাম নবীন দ্বন্দ্ব নিয়ে জল্পনা জোর পায়। কিন্তু সেই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানিয়ে দেন, পুরনো চাল ভাতে বাড়ে। তাই বর্ষীয়ান নেতাদের সম্মান দিতে হবে। নতুন-পুরনো, দুই চালই তাঁর দরকার বলেও জানিয়ে দেন তিনি।


এর পর অভিষেক সেভাবে বয়স নিয়ে কিছু না বললেও, গত লোকসভা নির্বাচনে সৌগত রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, কল্যাণদের মতো বর্ষীয়ান নেতাদের প্রচারে দেখা যায়নি তাঁকে। ট্রাম্প জেতার পর, অভিষেকের জন্মদিনে যেভাবে ফের বয়সের কথা পাড়লেন কল্যাণ, তাতে তৃণমূলের অন্দরে নতুন করে বয়স-বিতর্কে তিনি জাগিয়ে তুললেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। যদিও এদিন অভিষেকের ভূয়সী প্রশংসাও করেন কল্যাণ। সম্প্রতি কুণাল ঘোষ ঘোষণা করেন, মমতার পর অভিষেকই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হবেন। সে প্রসঙ্গে এদিন কল্যাণ জানান, মমতার পরই দলে অভিষেকের স্থান। সেই নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই। শুধু তাই নয়, মমতার পর সাম্প্রতিক রাজনীতিতে রাজ্যের মানুষ যদি কাউকে নেতা হিসেবে গ্রহণ করে থাকেন, তিনি অভিষেক বলেও দাবি করেন।