TMC: দেড় বছরে গ্রেফতার TMC-র ২ হেভিওয়েট মন্ত্রী, ২ বিধায়ক-সহ জেলবন্দি অনুব্রতও; শাসকের বাড়ছে অস্বস্তি

Central Agency: একাধিক মামলায় রাজ্যের মন্ত্রী ও তৃণমূল একাধিক হেভিওয়েট নেতার বাড়িতে হানা ও তাঁদের গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি

Continues below advertisement

বিজেন্দ্র সিংহ, সৌভিক মজুমদার ও সন্দীপ সরকার, কলকাতা : দেড় বছরের মধ্যে দুই মামলায় গ্রেফতার হলেন তৃণমূলের দুই হেভিওয়েট মন্ত্রী। প্রথমে পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়, এবার জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিক। এখনও জেলবন্দি তৃণমূলের আরেক হেভিওয়েট অনুব্রত মণ্ডলও। অস্বস্তি ক্রমেই বাড়ছে শাসক দলের।

Continues below advertisement

স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পর, এবার রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। দেড় বছরের মধ্যে দুই মামলায় গ্রেফতার হলেন রাজ্যের দুই হেভিওয়েট মন্ত্রী। তবে, বর্তমানে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছাড়াও জেলবন্দি রয়েছেন
তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য, জীবনকৃষ্ণ সাহা, বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ ও বহিষ্কৃত নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়রা। গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হয়ে তিহাড় জেলে বন্দি রয়েছেন বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল

সারদা, রোজভ্যালি কেলেঙ্কারি থেকে নারদকাণ্ড ও স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ড, এর আগে একাধিক মামলায় রাজ্যের মন্ত্রী ও তৃণমূল একাধিক হেভিওয়েট নেতার বাড়িতে হানা ও তাঁদের গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি।

২০১৪-র ১৩ ডিসেম্বর, সারদাকাণ্ডে কেন্দ্রীয় এজেন্সির হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন তৎকালীন মন্ত্রী মদন মিত্র। সেই সময় মোদি সরকারির বিরুদ্ধে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পথে নেমেছিল তৃণমূল। গলায় গলায় ঝুলছিল প্ল্যাকার্ড। যেখানে লেখা ছিল- আমি চোর, আমাকে গ্রেফতার করুন।

এরপর ২০১৭-র ৩ জানুয়ারি, রোজভ্যালিকাণ্ডে তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছিল CBI।

এরপর ২০১৯-এর ৩ ফেব্রুয়ারি, যেদিন লাউডন স্ট্রিটে কলকাতার তৎকালীন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাসভবন অবধি পৌঁছে গেছিল সিবিআই, তখন তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে ধর্নায় সামিল হয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী।

২০২১-এ বিধানসভা ভোট মিটতেই ১৭ মে, নারদকাণ্ডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার দুই হেভিওয়েট সদস্য সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও ফিরহাদ হাকিমকে গ্রেফতার করেছিল CBI। গ্রেফতার হয়েছিলেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক ও প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্রও। সারদাকাণ্ডের পর যিনি দ্বিতীয়বার গ্রেফতার হয়েছিলেন। সেদিন নিজাম প্য়ালেসে ছুটে গেছিলেন খোদ মুখ্য়মন্ত্রী।

এরপর গত বছর, ২৩ জুলাই স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাকতলার বাড়িতে তল্লাশি চালানোর পর, তাঁকে গ্রেফতার করে ED।

ওই মামলাতেই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি ও পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে ED এবং বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে গ্রেফতার করেছে CBI।

কিন্তু, মুখ্য়মন্ত্রীকে কখনও সক্রিয়ভাবে তাঁদের পাশে দাঁড়াতে দেখা যায়নি। কিন্তু, অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণভাবে বৃহস্পতিবার যখন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বাড়িতে ED হানা দিয়েছে, তখন সাংবাদিক বৈঠক করে তাঁর পাশে দাঁড়ান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি প্রশ্ন তোলেন, 'আমার প্রশ্ন একটাও কি বিজেপি নেতাদের বাড়ি রেড হয়েছে ? একটাইও কি বিজেপির ডাকাতদের বাড়িতে রেড হয়েছে ? একটাও কি বিজেপির মন্ত্রীদের বাড়িতে রেড হয়েছে ? একটাও কি বিজেপির চোরেদের বাড়িতে রেড হয়েছে ?' 
এরপর জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিককে গ্রেফতার করে ইডি। এপ্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'এই দুর্নীতির কিংপিন আপাতত এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের হেফাজতে গেছেন। কিন্তু, আমরা মনে করি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক সামনে ছিলেন। তাঁর তোলা অর্থের বড় অংশ মুখ্যমন্ত্রী তথা শাসক দলের কাছে গেছে। মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদন ছাড়া হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি কখনোই একজন জেলা স্তরের নেতার করার সম্ভব ছিল না।'

পাল্টা তৃণমূল বিধায়ক ও মন্ত্রী শশী পাঁজা জবাব দিয়েছেন, 'ক্যামেরাতে টাকা নিয়েছেন। নারদ এবং সারদা দুর্নীতিতে নাম রয়েছে। এফআইআর। তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়নি। বিজেপি কিন্তু এই বিষয়গুলি নিয়ে কিছু বলবে না।'

এরপর ইডি-সিবিআই-এর নজর আর কার কার দিকে, সেদিকেই নজর রাজনৈতিক মহলের।

 

Continues below advertisement
Sponsored Links by Taboola