কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা : একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ (Corruption Allegation) নিয়ে এবার বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন তৃণমূল সাংসদ জহর সরকার। পার্থ-ঘনিষ্ঠর বাড়ি থেকে টাকা উদ্ধার নিয়ে তাঁর বক্তব্য, এমন দৃশ্য টিভিতেও কম দেখা যায়। তিনি আরও বলেছেন, দুর্নীতির টাকা দিয়ে এভাবে অলঙ্কৃত করা দেখলে, গা শিরশির করে। পরিবার, বন্ধুদের থেকে টিপ্পনীও শুনতে হয়েছে বলে দাবি তাঁর।


পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দু’টো ফ্ল্যাট থেকে টাকার পাহাড় উদ্ধার করেছে ইডি। যার মোট অঙ্ক দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫০ কোটি। সেই সঙ্গে উদ্ধার হয়েছে আরও কয়েক কোটি টাকার গয়না। এই প্রেক্ষাপটে এবিপি আনন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দুর্নীতি ইস্যুতে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন, তৃণমূলেরই রাজ্যসভার সাংসদ এবং প্রাক্তন IAS অফিসার জহর সরকার (Jawhar Sircar)।


পরিবার-বন্ধুদেরও টিপ্পনী!


একান্ত সাক্ষাৎকারে জহর সরকার বলেছেন, 'যখন টিভিতে দেখলাম বিশ্বাসই করতে পারিনি। কারও বাড়ি থেকে এত টাকা বেরোতে পারে! কল্পনার অতীত। এমন দুর্নীতির (Corruption) সিন টিভিতে কম দেখা যায়। বাড়ির লোক সঙ্গে সঙ্গে বলল, রাজনীতি ছেড়ে দাও । সাংসদ পদ ছেড়ে দাও। বাড়ির লোক তো বলছে, এখুনি ছেড়ে দাও বাপু! বন্ধুরা টিপ্পনি কাটলো।  বললো, এখনও আছিস? কত পেয়েছিস?  এমন লাঞ্ছনা জীবনে কোনওদিন শুনতে হয়নি। আমি বাইরে থেকে রাজনীতিতে এসেছি। একুশের ঢেউ দেখে। আমাদের সামনে সবচেয়ে বড় শত্রু ফ্যাসিস্ট শক্তি, বিজেপি। চাকরি জীবনেও দেখেছি, একটা অংশ চোর ছিল। সব পেশায় একটা শ্রেণি থাকে,  যারা ধাপ্পাবাজি করতে এসেছে। রাজনীতিতেও করছে। যেভাবে করলো এবার, সেটা দৃষ্টিকটু।'


প্রাক্তন IAS অফিসার তথা তৃণমূলের রাজ্যসভার (Rajya Sabha MP) সাংসদ জোড়েন, 'রাজনীতির কায়দা আমি বুঝি না। আমার আবেদন থাকবে, যারা ধরা পড়ছে, যারা ধরা পড়তে পারে, যারা দুর্নীতিগ্রস্ত, তাদের চিহ্নিত করতে হবে। একুশের সময় বলেছিলেন, কাটমানির কথা। অনেকে ফেরত দিয়েছে। আমাদের সেই নীতি মানতেই হবে। রাজনীতির নামে টাকা বানাব। বান্ধবীর নামে ফ্ল্যাট কিনব, মানা যায় না। পার্থকে আমি চিনি। কিন্তু বিশ্বাস করতেই পারছি না। দুর্নীতির টাকা দিয়ে এ ভাবে অলঙ্কৃত করা, কেমন গা শিরশির করে।'


তৃণমূলের বক্তব্য


তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) পক্ষে রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বলেছেন, 'এ’বিষয়ে আমার কোনও মন্তব্য নেই। কোনও প্রতিক্রিয়া নেই, আমি শুধু একটাই কথা বলব, যে সাম্প্রতিককালে যা যা কিছু ঘটনা ঘটছে, সেগুলো দলের শীর্ষ নেতৃত্বের পর্যবেক্ষণ, মূল্যায়ন এবং প্রয়োজনে পদক্ষেপ অব্যাহত রয়েছে, আলাদা করে আমার কোনও বিষয়, আর জহরবাবুর বক্তব্যের ওপর আমার কোনও মন্তব্য নেই।'


আরও পড়ুন- 'কেষ্ট চোর, ববি চোর, অরূপ চোর, আমরা সবাই চোর, আর ওঁরা সাধু?' আক্রমণ মমতার