হিন্দোল দে, বিটন চক্রবর্তী ও রঞ্জিত সাউ, কলকাতা : ফের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিশানা করলেন কুণাল ঘোষ। বললেন, ডায়মন্ড হারবার থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লোকসভা ভোটে লড়াই করার কথা। এনিয়ে কটাক্ষ করেছে সিপিএম ও বিজেপি।


গতকাল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রশ্ন তুলেছিলেন, 'একজন নেতা অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়, তাঁর এত সম্পত্তি কোথা থেকে আসে?' তাঁকে উত্তর দিতে ছাড়েনি তৃণমূল। রাজ্যের শাসক দলের তরফে রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছিলেন,  'বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে একটা কথা বলব, আপনার যদি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেই এত কিছু জমে থাকে, তাহলে এটা তো আপনার রিটায়ারমেন্টের বছর, আপনি এখনই স্বেচ্ছা অবসর নিয়ে নিন এবং ২০২৪ সালে ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রে অভিষেকের বিরুদ্ধে আপনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুন।'


রইল না সম্পর্কের উষ্ণতা। দীর্ঘস্থায়ী হল না 'বন্ধুত্ব'ও। ফের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিশানা করলেন তৃণমূলের কুণাল ঘোষ।বললেন, ডায়মন্ড হারবার থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লোকসভা ভোটে লড়াই করার কথা।

স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি। রেশন বণ্টনে দুর্নীতির আবহে সোমবার, সম্পত্তি নিয়ে চ্য়ালেঞ্জ করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় ! তিনি বলেন,
'একজন নেতা অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়, তাঁর এত সম্পত্তি কোথা থেকে আসে? তিনি কি একটা সম্পত্তির হলফনামা দিয়ে, হলফনামা তৈরি করে, সোশাল মিডিয়াতে কি পোস্ট করবেন, যে তাঁর সম্পত্তি কত? সেটা করতে পারবেন? যদি তিনি করেন, আমি তাহলে অন্য়ান্য় সমতুল নেতা যাঁরা আছেন, যেমন ধরুন মীনাক্ষী মুখোপাধ্য়ায় বা অন্য় যাঁরা আছেন, তাঁদের কাছেও একই অনুরোধ রাখব আপনার সম্পত্তি হলফনামা করে সোশাল মিডিয়ায় দিন, আমরা দেখতে চাই।'

এর জবাবে কুণাল ঘোষ বলেন, 'এটা বিচারপতির ভাষা? নাকি টুলের উপর দাঁড়িয়ে কোনও পথসভায় কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের পথসভা, তৃণমূল বিরোধী ব্যক্তির বক্তৃতা। কণ্ঠটা অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। ভাষাটা সিপিএম আর বিজেপির, বিরোধীদের। তো অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের যদি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পত্তি নিয়ে এতটা আগ্রহী হন, তিনি তাঁর হলফনামাগুলো দেখে নিন।'

এই বিতর্কে সাংসদ ও বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, "অভিষেক বারবার ছাড় পাচ্ছেন সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট থেকে। তাঁর এত সম্পত্তি তার কোথাও হিসাব নেই। তিনি বলেন, আমার কোনও ব্যাঙ্ক অ্য়াকাউন্ট নেই, আমার কোনও গাড়ি নেই। অথচ সবাই জানেন, হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক উনি। দেশ-বিদেশ যাচ্ছেন। ব্যবসা করছেন। সেটা যতক্ষণ না সামনে আসবে, পুরো চিত্রটা পরিষ্কার হবে না। বারবার বলেছেন বিচারপতি। এবার কিন্তু এটাকে বের করতেই হবে।"


সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, "আমি নিজে ইনকাম ট্যাক্সে চিঠি দিয়েছিলাম। এমএলএদের নাম উল্লেখ করে। এঁদের ২০১১ সালে কত সম্পত্তি ছিল, ২০১৬ সালে কতগুণ বাড়ল, কী করে বাড়ল। মুখ্যমন্ত্রীর  যত ঘনিষ্ট তাঁদের সব সম্পত্তি বেড়ে আঙুল ফুলে কলাগাছ। বেআইনি লুঠ এবং তার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়া উচিত।"

সব মিলিয়ে, বিচারপতির মন্তব্যকে নিয়ে তুঙ্গে রাজনৈতিক আকচাআকচি।