উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: লোকসভা ভোটের আগে বিধানসভায় উপস্থিতি নিয়ে কড়াকড়ি তৃণমূলের (TMC)। গতকালই দলের বিধায়কদের উদ্দেশ্যে বিধানসভায় হাজিরা নিয়ে কড়া বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)।
দলনেত্রীর নির্দেশ মেনে দলীয় বিধায়কের উপস্থিতি নিয়ে কড়াকড়ি করছে তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের নির্দেশ মেনে ঠিক হয়েছে, কে কখন হাউসে ঢুকছে, কখন বেরোচ্ছেন তার রেকর্ড রাখা হবে। দলের সব বিধায়ক এবং মন্ত্রীদের সই করতে হবে, তার সঙ্গেই সময় উল্লেখ করতে হবে। তারই ছবি দেখা গিয়েছে বিধানসভার অধিবেশনের প্রথম দিনে। লম্বা লাইন দেখা গিয়েছে তৃণমূলের বিধায়কদের। তৃণমূল বিধায়করা সই করেছেন নির্মল ঘোষের ঘরে। মন্ত্রীদের সই করতে হয়েছে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের ঘরে গিয়ে। ৭ দিন পর এই তালিকা পাঠানো হবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে।
উপস্থিতির হার নিয়ে ভাবছে তৃণমূল:
বিধানসভায় ক্রমাগত উপস্থিতির হার কমছে। তৃণমূলের ২২২ জন বিধায়ক আছেন। কিন্তু অধিবেশনের সময় এমন দিনও দেখা গিয়েছে যে কোনও কোনও দিন ১০০ জন বিধায়কও উপস্থিত থাকেন না। একই ছবি দেখা যায় মন্ত্রীদের ক্ষেত্রেও। প্রত্যেক মন্ত্রীদের প্রশ্নোত্তরের নির্দিষ্ট দিন থাকে। শুধুমাত্র সেই দিন ছাড়া উপস্থিত থাকেন না মন্ত্রীরা। এমন অবস্থায় যদিও কখনও বিধানসভায় ভোটাভুটি হয়, তাহলে আশঙ্কা তৈরি হয়ে যায়। দলের বিধায়কদের বিধানসভায় উপস্থিতির হার কম থাকার বিষয়টি বারবার আলোচিত হয়েছে দলের অভ্যন্তরীণ আলোচনায়। অনেকবার পরিষদীয় দলের মিটিংয়ে বলা হয়েছে, মৌখিক বার্তা দেওয়া হয়েছে। এবার ওই বিষয়েও আরও কড়া হচ্ছে দল। তৃণমূল সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রত্যোকের হাজিরা রাখা হবে। যখন বিধায়করা বিধানসভায় ঢুকবেন সই করে টাইম দিতে হবে। বেরনোর সময়ও একই নিয়ম।
বিধানসভায় যখন অধিবেশন চলে, তখন নানা বিষয় নিয়ে প্রশ্নোত্তর পর্ব হয়। অনেকসময় বিরোধী পক্ষের সদস্য প্রশ্ন তোলেন, তার উত্তর দেন শাসক পক্ষের সদস্য়। অনেকসময়েই বিধানসভায় কোনও ইস্যুতে ভোটাভুটিও হয়ে থাকে। যদি এমন পরিস্থিতি তৈরি হয় যে, ভোটাভুটির সময় দেখা গেল বিরোধী পক্ষের সবাই উপস্থিত থাকলেও, শাসক বেঞ্চের অনেকেই অনুপস্থিত। তাহলে ভোটাভুটি চাপে পড়তে পারে শাসকপক্ষ। সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই দলের সব বিধায়ককে নিয়ম মতো বিধানসভায় উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এর আগেও বহুবার এই নির্দেশ দিলেও, আদতে অনেকসময়েই শাসক দলের অনেককেই বিধানসভায় উপস্থিত হতে দেখা যায়নি। ফলে এবার হাজিরা খাতায় সই করার মতো কড়া পদক্ষেপ নিল তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব, এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।