পূর্ণেন্দু সিংহ, হংসরাজ সিংহ: একমাস পর স্কুল খুললেও, রাজ্যের বেশ কিছু স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল হাতেগোনা। ক্লাসমুখী করতে বাঁকুড়ায় (Bankura) পড়ুয়াদের বাড়িতে চলে যান মাস্টারমশাইরা। পুরুলিয়ার (Purulia) রঘুনাথপুর গার্লস হাইস্কুলে ছিল মাত্র এক চতুর্থাংশ পড়ুয়া।


স্কুল খুললেও, কার্যত খাঁ খাঁ করছে ক্লাসরুম। পড়ুয়াদের স্কুলে আনতে, তাদের বাড়িতেই পৌঁছে গেলেন শিক্ষক। অভিভাবকদের শিক্ষকরা প্রশ্ন করছেন, “আপনাদের ছেলেমেয়েরা তো স্কুলে পড়ে। আজ থেকে সরকার স্কুল খোলার কথা বলেছে। এই করোনাতে তো ২ বছর বন্ধ ছিল। ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাননি কেন? ’’


দরজা খোলামাত্র মাস্টারমশাইয়ের এমন প্রশ্ন শুনে কার্যত থতমত খেয়ে যান অভিভাবকরা। একমাস পর রাজ্যে ফের বেজেছে স্কুলের ঘণ্টা। কিন্তু, বাঁকুড়ার পুরন্দরপুর হাইস্কুলে এদিন, অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ৩০০ পড়ুয়ার মধ্যে মেরেকেটে মাত্র ১০ জন ছিল হাজির। অনুপস্থিত পড়ুয়াদের তালিকা তৈরি করে মাস্টারমশাইরা চলে যান পড়ুয়াদের বাড়িতে।  অভিভাবকদের পাশাপাশি পড়ুয়াদেরও বোঝানো হয়।


স্কুল খুললেও পড়ুয়াদের সংখ্যা নগন্য, তা জানতে পাড়ায় পাড়ায় গেলেন শিক্ষকরা। বাঁকুড়ার পুরন্দরপুর হাইস্কুলের শিক্ষক দীপক দলুই বলেন, “স্কুলে দেখি অনেক কম, কোনও ক্লাসে একজন, কোথাও একজনও নেই। দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকার ফলে অনীহা তৈরি হয়। পাড়ায় পাড়ায় শিক্ষালয়ের মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করব।‘’কিন্তু, কেন প্রথম দিনে স্কুলে হাতে গোনা পড়ুয়ার উপস্থিতি? ওই স্কুলেরই ছাত্র রূপঙ্কর চৌধুরী বলেন, “মাস্টারমশাইয়া বলছেন তোমরা স্কুলে যাওনি কেন? আমরা বলি সরস্বতীর পুজোর পর থেকে যাব। আজ টিউশন ছিল বলে যাইনি।‘’


পাশের জেলা পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরেও ছবিটা একইরকম। রঘুনাথপুর গার্লস হাইস্কুলে মাত্র ২৬ শতাংশ পড়ুয়া এদিন উপস্থিত ছিল। স্কুল খুললেও, উপস্থিতির হার বেশ কম। এই নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন শিক্ষিকারা। রঘুনাথপুর গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মৌটুসী চন্দ্র বলেন, “মনে হয় সরস্বতীর পুজোর জন্য আসেনি। পুজোর পর সব ঠিক হয়ে যাবে।‘’ রাজ্যের অন্যত্র হইহই করে স্কুল চালু হলেও, ছন্দে ফেরেনি এমন অনেক স্কুলই।


আরও পড়ুন: Malda News: স্কুলে এসেও ফিরতে হল পড়ুয়াদের, সত্যতা স্বীকার প্রধান শিক্ষকের