বিজেন্দ্র কুমার, নয়া দিল্লি: গরুপাচার মামলায় আরও ১২ দিন তিহাড়েই থাকতে হবে অনুব্রত মণ্ডলকে। আজ আদালতে পেশ করা হলে, ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত বীরভূমের তৃণমূল সভাপতির জেল হেফাজতের মেয়াদ বাড়াল দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্ট। অন্যদিকে, এর আগে তিহাড় জেল থেকে আসানসোল জেলে ফেরত পাঠানোর আবেদন জানিয়েছিলেন অনুব্রত।


আজ তার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শনিবার দ্বারকা আদালতের এক আইনজীবীকে খুনের প্রতিবাদে দিল্লি বার কাউন্সিলের ডাকা ধর্মঘটের জেরে আজ অনুব্রতর আবেদনের শুনানি হয়নি। ৫ মে দিল্লির রাউস অ্যাভানিউ কোর্টে অনুব্রতর জেল-বদল মামলার শুনানি হবে। এদিন আদালত থেকে তিহাড়ে ফেরত যাওয়ার সময় অনুব্রত জানান, তাঁর বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে। হাসপাতালে আছেন, জামিন পেলে ভাল হয়। 


কোনও দিকেই মিলল না স্বস্তি! গরুপাচার মামলায় আপাতত তিহাড় জেলেই থাকতে হবে অনুব্রত মণ্ডলকে। এদিকে দিল্লি হাইকোর্টে ৪ মাস পিছিয়ে গিয়েছে বীরভূমের তৃণমূল সভাপতির জামিনের আবেদনের শুনানি। ইডির অভিযোগের প্রেক্ষিতে এক মাসের মধ্যে অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবীকে নিজেদের বক্তব্য হলফনামা আকারে জমার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। পরবর্তী শুনানি ২৭ জুলাই। 


আপাতত দিল্লির তিহাড় জেলেই থাকতে হবে গরুপাচার মামলায় ধৃত বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে! দিল্লি হাইকোর্টে ৪ মাস পিছিয়ে গেল অনুব্রত মণ্ডলের জামিনের আবেদনের শুনানি! অর্থাৎ কেষ্টর কষ্ট কমার এখনই কোনও সম্ভাবনা নেই! গরুপাচার মামলায় গত বছরের ১৭ নভেম্বর আসানসোল জেলে গিয়ে বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতাকে প্রায় ৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করার পর গ্রেফতার করে ইডি।  নানা টালবাহানার পর দোলের দিন অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি নিয়ে আসে কেন্দ্রীয় সংস্থা।২১শে মার্চ, ইডি-র হেফাজত শেষে, আপাতত তিহাড় জেলে ঠাঁই হয়েছে অনুব্রত মণ্ডলের। এর মাঝে রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে জামিনের আর্জি করলেও, তা খারিজ করে দেয় আদালত। এরপর একাধিক আবেদন নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বীরভূমের কেষ্ট!


তার মধ্যে রয়েছে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট জারি করার এক্তিয়ার কোনও গ্রাউন্ডে তাঁকে ইডি গ্রেফতার করেছে, তা না জানানোর অভিযোগ এবং জামিনের আবেদন।  বুধবার অনুব্রত মণ্ডলের এই তিনটি আবেদনের শুনানি একসঙ্গে হয় দিল্লি হাইকোর্টে বিচারপতি দীনেশ শর্মার এজলাসে। রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টের জারি করা প্রোডাকশন ওয়ারেন্টের ভিত্তিতে যেহেতু অনুব্রত মণ্ডলকে ইতিমধ্যে দিল্লিতে নিয়ে আসা হয়েছে, তাই সেই সংক্রান্ত আবেদন এদিন আর শুনতে চায়নি দিল্লি হাইকোর্ট। 


এর পর অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী জানান, কোন প্রেক্ষিতে এবং কী কারণে ইডি অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে, তা তাঁদের জানানো হয়নি। এ নিয়ে বিচারপতি ইডিকে গ্রেফতার সংক্রান্ত নথি দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। এর পর অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী তাঁর জামিনের আবেদন জানান। তখন বীরভূমের তৃণমূল সভাপতির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের উল্লেখ করে জামিনের তীব্র বিরোধিতা করেন ইডির আইনজীবী। 


সেকথা শুনে অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবীকে স্টেটাস রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য ইডিকে নির্দেশ দেন বিচারপতি এবং ইডি-র অভিযোগের প্রেক্ষিতে চার সপ্তাহের মধ্যে অনুব্রতর আইনজীবীকে তাঁদের বক্তব্য হলফনামা আকারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। ২৭ জুলাই পরবর্তী শুনানি। এরই মধ্যে তিহাড় জেল থেকে আসানসোল জেলে ফিরে যাওয়ার জন্য ২৫ মার্চ রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে আবেদন করেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। সেই আবেদনের শুনানি হবে তেসরা এপ্রিল। 


গরুপাচারকাণ্ডে আসানসোলের সিবিআই আদালতেও পিছিয়েছে অনুব্রত-মামলার শুনানি। ইডি-র মামলায় দিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি। গরুপাচার মামলায় এদিন আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে ভার্চুয়ালি পেশ করার কথা ছিল অনুব্রতকে। দিল্লি হাইকোর্টে অনুব্রতর শুনানি জুলাই পর্যন্ত পিছোনোয় এদিন আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে আসেননি তৃণমূল নেতার আইনজীবী।