কলকাতা: একের পর এক গুলিচালনার ঘটনা দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় (south 24 parganas)। সঙ্গে আবার নৌসেনা কর্মীর দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য। সব মিলিয়ে তোলপাড়। কিন্তু প্রশাসনের নাকের ডগা দিয়ে হামলার অস্ত্র (weapon) আসছে কোথা থেকে? রাজ্য পুলিশের (state police) প্রাক্তন আইজি (Ex IG) পঙ্কজ দত্তের (Pankaj Dutta) বক্তব্য, 'সার্বিক ভাবে এটি পুলিশের ব্যর্থতা (failure)।' সঙ্গে সাবধানবাণী, 'আগামীদিনে পঞ্চায়েত নির্বাচন (panchayat election) যখন চলবে, তখন এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলে বাংলা কোথায় চলে যাবে তা আমরা এখনও বুঝতে পারছি না।'
কী বললেন প্রাক্তন পুলিশকর্তা?
পঙ্কজ দত্তের মতে, 'অস্ত্র যে সহজলভ্য, পুলিশ যে অস্ত্র উদ্ধার করতে পারছে না, মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দেওয়া সত্ত্বেও যে অস্ত্র উদ্ধার করা যাচ্ছে না এবং পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে মারা হচ্ছে, এসবের থেকে দুর্ভাগ্যজনক আর কিছু হতে পারে না।' বিষয়টিকে সার্বিক ভাবে পুলিশি ব্যর্থতা বলে আগামীদিনের জন্যও সতর্কবার্তা দিয়ে রেখেছেন তিনি। সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। সে সময়েও এমন কিছু চলতে থাকলে তার পরিণতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াতে পারে, সেটি নিয়ে উদ্বেগ ধরা পড়ে রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন আইজির কথায়।
কী ঘটেছে?
এদিন যে ঘটনার পর নতুন করে হইচই শুরু হয়েছে তার কেন্দ্রে এক যুবকের রহস্যমৃত্যু। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরের কামরাবাদে। পরিবারের অভিযোগ, লাল্টু হাজরা নামে ওই যুবককে গুলি করে খুন করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই যুবক তাঁর এক বন্ধুর বাড়িতে গতকাল রাতে একাই ছিলেন। মাঝরাতে অন্য এক বন্ধু এসে দেখেন, লাল্টু গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। সোনারপুর থানার পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে সোনারপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিত্সকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। কে বা কারা, কেন যুবককে গুলি করে খুন করল তা পরিষ্কার নয়। ঘর থেকে গুলির খোল ও গুলিও উদ্ধার করেছে পুলিশ। খুব কাছ থেকে পেটে গুলি করা হয় বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এই ঘটনায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ। উল্লেখ্য, সোনারপুরে এর আগেও প্রকাশ্যে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে। এপ্রিলের ২২ তারিখের গুলি চলে সোনারপুর মাছ বাজারের মধ্যে। সেই ঘটনায় কেউ জখম না হলেও এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। ঘটনায় তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দের অভিযোগ তোলেন বিরোধীরা। যদিও তৃণমূলের তরফ থেকে সেই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়। অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতারও করে পুলিশ। ঘটনাচক্রে, এদিনই আবার বারুইপুরে প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীরা দেহাংশ উদ্ধারের ঘটনায় নতুন করে রহস্য দানা বাঁধে। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে ইঙ্গিত, প্রথমে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছিল ওই ব্যক্তিকে। তারপর দেহ লোপাটের জন্য সার্জিক্যাল কাটার দিয়ে দ্বিখণ্ডিত করা হয় দেহ। মাথা-সহ দেহের ওপরের অংশ প্যাকেটে মুড়ে ফেলে যাওয়া হয়। কিন্তু মৃতের দেহের বাকি অংশ ও হাত-পায়ের খোঁজ এখনও মেলেনি। গত ১৪ নভেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন উজ্জ্বল চক্রবর্তী নামে ওই ব্যক্তি। ১৫ নভেম্বর বারুইপুর থানায় মিসিং ডায়েরি করা হয়। কে বা কারা, কেন খুন করে এভাবে দেহাংশ ফেলে গেল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। খুন ও তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়। সব মিলিয়ে পর পর দুটি ঘটনার নজরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, প্রশ্নের মুখে পুলিশের ভূমিকাও।
আরও পড়ুুন:'এখনও অতিসঙ্কটজনক ঐন্দ্রিলা', কী বললেন চিকিৎসক ?