হিন্দোল দে, চঞ্চল মজুমদার ও সুনীত হালদার, কলকাতা : ধর্মঘট রুখতে কোথাও তৎপর পুলিশ, কোথাও আবার পুলিশের বিরুদ্ধে অতি সক্রিয়তার অভিযোগ উঠল। ধর্মঘটিদের টেনে-হিঁচড়ে, চ্যাংদোলা করে গাড়িতে তুললেন পুলিশ কর্মীরা। দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরে, ধর্মঘটি সিপিএম নেতাকে চড় কষালেন থানার IC। অন্য়দিকে, ধর্মঘট সমর্থকদের চড় খেতে হল পুলিশকেও। কলেজ স্ট্রিটে, প্রিজন ভ্য়ানে তোলার সময়, জোড়াসাঁকো থানার OC-কে চড় মারেন SFI নেত্রী । 

Continues below advertisement

মোদি সরকারের বিভিন্ন শ্রম নীতির বিরুদ্ধে বাম ও কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকে ধর্মঘট। ধর্মঘটের কড়া বিরোধিতা করে পথে নামল তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন। ধর্মঘটে অংশ নিল না আরএসএস-এর শ্রমিক সংগঠন। আর তৃণমূলের পাশাপাশি ধর্মঘট রুখতে বুধবার সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গেল পুলিশকে। যে পুলিশ তৃণমূল দাদাগিরি করলে চুপ করে বসে থাকে বলে অভিযোগ, অনুব্রত মণ্ডল আইসির- মা ও স্ত্রীকে অশ্লীল ভাষায় আক্রমণ করলেও, পর্যাপ্ত কড়া ব্য়বস্থা নেয় না বলে অভিযোগ, বাম-কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের ডাকা ধর্মঘটের দিন সেই পুলিশকেই দেখা গেল এই ভূমিকায়।

দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরে বামেদের জমায়েতে বাধা দেয় পুলিশ। ধর্মঘট সমর্থনকারীদের সঙ্গে বচসা বাধে বংশীহারি থানার IC-র। এরপরই সিপিএম নেতাকে সপাটে চড় কষান বংশীহারি থানার IC অসীম গোপ। বাম নেতাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। ধর্মঘটের সমর্থনে সিপিএমের মিছিল ঘিরে দক্ষিণ কলকাতার গাঙ্গুলিবাগানে ধুন্ধুমার বাধে। SFI-এর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্যর সঙ্গে পুলিশের বাগ্‍‍বিতণ্ডা শুরু হয়। জামার কলার ধরে টেনে-হিঁচড়ে SFI নেতাকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। বাম সমর্থকরা বাধা দিলে পুলিশের সঙ্গে কার্যত মারামারি শুরু হয়।

Continues below advertisement

এ প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায় বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একদম নরেন্দ্র মোদির কাজটা এক্সিকিউট করছেন। তাই পুলিশ দিয়ে বনধ বন্ধ করা। আর এই পুলিশ অনুব্রত মণ্ডলের কাছে মাথা নিচু করে থাকে, মেরুদণ্ড জমা দিয়ে থাকে। মা-বোনদের ইজ্জত নিয়ে যখন অনুব্রত মণ্ডলরা কথা বলেন, তাদের সামনে মাথা নিচু। অপরাধীদের সামনে মাথা নিচু। আর যাঁরা গণতান্ত্রিকভাবে ধর্মঘট করচেন, তাঁদের চড় মারছে।"

পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূল । তৃণমূল কংগ্রেসের আইটি সেলের প্রধান দেবাংশু ভট্টাচার্য বলেন, "বনধ করা, আর বনধের নামে বাঁদরামি করা, গুন্ডামি করা তো এক জিনিস নয়। কেরালার বামফ্রন্ট সরকার যেখানে বামফ্রন্টের ডাকা ধর্মঘটকে গ্রহণ করছে না, আপনারা আশা করছেন, পশ্চিমবঙ্গের সরকার, যাদের ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে অন্য়রকম স্ট্য়ান্ড, তারা সেই জিনিসটা করবে? এটা দ্বিচারিতা নয়?"

হাওড়ার ডোমজুড়ে ধর্মঘট সমর্থনকারীরা বাস থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে, লাঠিচার্জ করে পুলিশ। লাঠির ঘায়ে ২ জন সিপিএম কর্মী আহত হন।

এদিকে কলকাতায় ধর্মঘটে সামিল SFI-DYFI নেতা, কর্মীদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে অবরোধ করা হয় কলেজ স্ট্রিটে। পুলিশের সঙ্গে উত্তপ্ত বাদানুবাদের পর, শুরু হয় ধস্তাধস্তি। প্রিজন ভ্য়ানে তোলার সময় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। জোড়াসাঁকো থানার ওসিকে চড় মারেন এসএফআই নেত্রী ।