সৌমেন চক্রবর্তী, পশ্চিম মেদিনীপুর: সরকারি ঘোষণার পরেও নিজের জেলায় বদলি (transfer) হয়নি। এমনই অভিযোগে এবার মুখ্যমন্ত্রীর (chief minister) দ্বারস্থ হতে চলেছেন ঝাড়গ্রামে (Jhargram) কর্মরত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ৪০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গেছে, পর্যাপ্ত শিক্ষক থাকলে বদলিতে সমস্যা হবে না।
'নিজের জেলায় বদলি' না হওয়ার অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ
২০২১ সালের ২২ জুলাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিক্ষকদের জন্য 'উৎসশ্রী' স্কিমের কথা ঘোষণা করেছিলেন। যাঁরা নিজের জেলা বা বাড়ির কাছে ট্রান্সফার চান তাঁদের জন্য ঘোষণা করা হয়। শিক্ষকদের যাতে অনেক দূরে যেতে না হয় তাই এই সিদ্ধান্ত।
শিক্ষকদের নিজের জেলায় বদলির জন্য এক বছর আগে চালু হয় উৎসশ্রী পোর্টাল। তবে ঝাড়গ্রাম জেলায় কর্মরত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ৪০ জন প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকার অভিযোগ, তাঁরা আবেদন জানালেও বদলি করা হয়নি। শিক্ষকদের কাউকে স্কুলে যাওয়ার জন্য রোজ ১৫০ কিলোমিটার যাতায়াত করতে হয়। কারও বাড়িতে আছে অসুস্থ বাবা-মা, ছোট সন্তান।
মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুরে আসছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বদলি সমস্যা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হতে চলেছেন প্রাথমিক শিক্ষকরা। বঞ্চিত প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য মঞ্চের সভাপতি সুরজিৎ মাহাতো বলেন, 'আমরা যোগ্য। বিভিন্ন জায়গায় আবেদন জানিয়েছি। কিন্তু আমাদের বদলি হচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রী মেদিনীপুরে আসছেন। চেষ্টা করব তার কাছে পৌঁছনো যায় কি না, নাহলে আইনের পথ খোলা আছে।'
আরও পড়ুন: South 24 Pargana News: ভরা কটালে সমুদ্র বাঁধের ফাটল দিয়ে জল ঢুকছে গ্রামে, আশঙ্কায় গ্রামবাসীরা
যদিও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দফতর জানিয়েছে, পর্যাপ্ত শিক্ষক থাকলে বদলিতে সমস্যা হবে না। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু বিষই বলেন, 'উৎসশ্রীর মাধ্যমে যে কেউ আবেদন করতে পারে। অনলাইনে সবটাই হয়। পর্যাপ্ত শিক্ষক থাকলে আটকানোর জায়গা থাকে না।'
শিক্ষকদের নিজের জেলায় বদলির সমস্যা
শিক্ষকদের নিজের জেলায় বদলির সমস্যা নিয়ে তুঙ্গে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিজেপি মহিলা মোর্চার সাধারণ সম্পাদক পারিজাত সেনগুপ্ত বলেন, 'শাসক দলের নেতারা হয়তো আগেভাগে সিট বুক করে রেখেছে। এখানে পাস না করে এসএসসিতে নিয়োগ হয়, পুরোটা দুর্নীতিতে ভরে গেছে। যার কাছে যাক সুরাহা হওয়ার কিছু নেই।'
অন্যদিকে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক প্রদ্যোৎ ঘোষ বলেন, 'বিজেপি তো অভিযোগ করবেই। হাইকোর্টে একের পর এক মামলায় প্যানেল ঝুলে আছে। শিক্ষকের অভাব থাকলে স্কুল থেকে তো টিচার সরানো যায় না, যতক্ষণ না সেখানে টিচার পাওয়া যাচ্ছে।'
প্রাথমিক শিক্ষকরা জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর থেকে স্পষ্ট কিছু জানতে না পারলে, আইনি পদক্ষেপ করবেন।