ভাস্কর মুখোপাধ্য়ায়, রুমা পাল, শিবাশিস মৌলিক: বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলক ইস্যুতে এবার অবস্থানে সামিল হল তৃণমূল। শুক্রবার সকালের মধ্যে ফলকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম না ফিরলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পরই, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে রবিঠাকুরের ছবি নিয়ে অবস্থানে সামিল হল তৃণমূল। 


বিশ্বভারতীর ক্যাম্পাসের বাইরে মঞ্চ, মঞ্চের ওপরে রবিঠাকুরের ছবি দেওয়া প্ল্যাকার্ড নিয়ে বসে তৃণমূলের মহিলা কর্মীরা ছবির নীচে লেখা লহ প্রণাম, বিশ্বভারতীর ফলক বিতর্কে শুক্রবার এভাবেই প্রতিবাদে সামিল হল তৃণমূল। বাংলার গর্বের শান্তিনিকেতন। বিশ্বের গর্বের বিশ্বভারতী, তারই ফলকে ফের লেগেছে বিতর্কের কালি আর রাজনীতির রং!


বিশ্বকবির অমর সৃষ্টিকে বিশ্ব ঐতিহ্যের সম্মান দিয়েছে ইউনেসকো। অথচ বিশ্বভারতীর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ফলকেই নেই খোদ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম। আছেন কেবল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী! এই নিয়ে বৃহস্পতিবারই কার্যত হুঁশিয়ারির সুর শোনা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর গলায়। 


মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, যদি কাল সকালের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম না লেখা হয়, তাহলে আমাদের ওখানের লোকেরা সকাল ১০ টা থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি বুকে নিয়ে আন্দোলন শুরু করবে। 


এরপরই, শুক্রবার কবিগুরু মার্কেটের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হল তৃণমূল। তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিংহ, আমরা তো প্রথম থেকেই বলে আসছি ইনি এসে রবিঠাকুরের নাম মোছার চেষ্টা করছে।তাই দীর্ঘদিন যাবৎ বিশ্বভারতীতে একটা রবিঠাকুর তার ফলকও লাগায়নি। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কথায়, বিশ্বভারতী রবীন্দ্রনাথের নাম ছাড়া হতে পারে না। অনিচ্ছাকৃত কোনও ভুল হয়ে থাকলে সংশোধন করা উচিত। যদি মনে হয় রবীন্দ্রনাথকে সম্মান জানানো হয়েছে সেটাও উপাচার্যকে পরিষ্কার করে জনসমক্ষে বলা উচিত।


এই নিয়ে এদিন সোশাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেন বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা। সেখানে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে নিশানা করে লেখেন, আগেও বলেছি এখনও বলছি নিজের উপাচার্য পদ বাঁচানোর তাগিদে প্রধানমন্ত্রীকে খুশি করতে গিয়ে এই ওভারস্মার্ট ভণ্ড বিজেপি বিশ্বভারতীর উপাচার্য, আরও ক্ষতি করবে।  


এদিকে, বিশ্বভারতীর ফলক বিতর্ক নিয়ে বৃহস্পতিবার উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে ফোন করেন রাজ্যপাল। কেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম ফলকে নেই তা নিয়ে কৈফিয়ত চান সিভি আনন্দ বোস। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয়, কেন্দ্রীয় তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রক এবং আর্কিওলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়াকে বিষয়টি বলা হয়েছে, ফলকে কী লেখা থাকবে তারাই ঠিক করবে। 


বিশ্বভারতীর ফলকে কি শেষ অবধি ফিরবেন খোদ বিশ্বভারতীর প্রতিষ্ঠাতা রবিঠাকুর? না কি থেকে যাবেন নরেন্দ্র মোদি আর বিদ্য়ুৎ চক্রবর্তীই?