কলকাতা: অতীতেও অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে জেলে গিয়েছিলেন ফাল্গুনী। শিলিগুড়িতে কাকাশ্বশুরের বাড়িতে চুরির অভিযোগে গ্রেফতার হন তিনি। এবার আরও বড় অপরাধ করেও শান্ত ছিলেন মা মেয়ে। ঠান্ডা মাথায় দেহ লোপাটের পরিকল্পনা করেছিলেন। এরকম হাড়হিম করা ঘটনা ঘটিয়েও কীভাবে শান্ত থাকা যায়? কী বলছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা?
খুন করে প্রায় ২ দিন বাড়িতে রেখে দিয়েছিলেন আত্মীয়ার দেহ। পুলিশ সূত্রে খবর, খুনের পর বউবাজারে ৫০ হাজার টাকার গয়না অর্ডার দিয়েছিলেন ফাল্গুনী। ঠান্ডা মাথায় মা-মেয়ে কিনেছিলেন বড় ট্রলিব্যাগ। দেহ ফেলতে যাওয়ার সময় মা-মেয়ে আলোচনা করছিলেন খাবার-দাবার নিয়ে। ঘুণাক্ষরেও বুঝতে দেননি, কী রয়েছে ট্রলিব্যাগে। কী করতে চলেছেন তাঁরা। কোন ধরনের মানসিক অবস্থায় এরকম হাড়হিম করা ঘটনা ঘটিয়েও শান্ত থাকা যায়? মনোরোগ বিশেষজ্ঞ সব্যসাচী মিত্র বলেন, "এদের মধ্যে অনুশোচনা বলে কোনও বস্তু থাকে না। এদের অপরাধমূলক মনোভাবই এদের পুরস্কৃত করে। এরা খুব আত্মকেন্দ্রীক এবং কৌশলি হয়। এদের এই ধরনের মানসিকতা থাকলে সাইকোপ্যাথ বা ক্রিমিনাল বলা হয়। হয়ত দেখা যাবে এরা আগেও এরকম ধরনের অপরাধ করে থাকতে পারে।
আরতি ও ফাল্গুনী ঘোষ সম্পর্কে মা-মেয়ে। নিহত সুমিতা ঘোষ আরতির মেয়ে ফাল্গুনীর পিসি শাশুড়ি। ২০১৮ সালে অসমের জোড়হাটের বাসিন্দা শুভঙ্কর ঘোষের সঙ্গে বিয়ে হয় ফাল্গুনীর। তিন বছর পর, শিলিগুড়ি এসে শুভঙ্করের মামা সুব্রত ঘোষের বাড়িতে থাকতে শুরু করেন তাঁরা। পরে বনিবনা না হওয়ায় ফাল্গুনী স্বামীর থেকে আলাদা থাকতেন। ২০২৩ সালে মায়ের কাছে চলে আসেন তিনি। অন্যদিকে, সুমিতার শ্বশুরবাড়ি পূর্ব বর্ধমানের নাদনঘাটে। কিন্তু ২০১৭ সাল থেকে তিনি স্বামীর সঙ্গে থাকতেন না। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, অতীতেও অপরাধ করে জেলে গিয়েছিলেন ফাল্গুনী।
পুলিশ সূত্রে খবর, ২০২১ সালে শিলিগুড়ি সুভাষপল্লিতে কাকাশ্বশুরের বাড়িতে চুরির অভিযোগে গ্রেফতার হন তিনি। পুলিশ সূত্রে খবর, খুন করার পর শুধু শান্ত থাকাই নয়, পালিয়ে বেড়ানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার জন্য খুনের পরের দিন, সোমবার সুমিতার অ্যাকাউন্ট থেকে ২৫ হাজার টাকা তুলেছিলেন ফাল্গুনী। কিন্তু শেষমেশ পুলিশের জালে মা-মেয়ে।
আরও পড়ুন: HS Exam 2025: কমল পরীক্ষার্থীর সংখ্যা, উচ্চমাধ্যমিকের আগে একগুচ্ছ নির্দেশিকা সংসদের