সমীরণ পাল, সুদীপ্ত আচার্য ও জয়ন্ত রায়, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীতে তুষারঝড়ের কবলে পড়ে মৃত্যু হয় এরাজ্যের দুই শিক্ষার্থী পর্বতারোহীর। সোমবার মহেশতলার অমিত কুমার সাউয়ের দেহ পৌঁছয় বাড়িতে। আজ আরেক শিক্ষার্থী পর্বতারোহী সন্দীপ সরকারের দেহ তুলে দেওয়া হবে পরিবারের হাতে।  


কথা ছিল, পর্বতারোহনের প্রশিক্ষণ সেরে ১২ অক্টোবর পরিবারের কাছে ফিরবেন। তার দু দিন আগেই বাড়ি ফিরে এলেন মহেশতলার অমিত কুমার সাউ। তবে জীবিত নয়, ফিরল তাঁর কফিনবন্দি নিথর দেহ। একই অভিযানে তাঁর সহযাত্রী, নিউ ব্যারাকপুরের সন্দীপ সরকারও প্রাণ হারিয়েছেন। শোকে পাথর দুই পরিবার।


পেশায় বেসরকারি সংস্থার কর্মী ছিলেন অমিত কুমার সাউ। বাঁকুড়ার একটি স্কুলে ভূগোলের শিক্ষক ছিলেন সন্দীপ সরকার। কিন্তু, পেশা যাই হোক না কেন, পাহাড় ওদের টানত! নেশা ছিল শৃঙ্গ জয়। ১১ সেপ্টেম্বর, নেহেরু ইনস্টিটিউট অফ মাউন্টেনিয়ারিং থেকে ৪১ জনের দলের সঙ্গে উত্তরকাশীর দ্রৌপদী ডান্ডা টু অভিযানে রওনা দিয়েছিলেন দুজন । চড়াই-উৎরাই, বাধা বিপত্তি কাটিয়ে চূড়ায় পৌঁছেছিলেন। কিন্তু, সেই স্বপ্নজয়ের আনন্দ আর পরিজনদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া হল না। 


ফেরার পথে আচমকা তুষারঝড়ে সব লণ্ডভণ্ড। ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। অনেককেই এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলার অমিত কুমার সাউ ও উত্তর ২৪ পরগনার নিউ ব্যারাকপুরের সন্দীপ সরকার। সোমবার মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের তত্ত্বাবধানে অমিতের দেহ পৌঁছয় মহেশতলার বাড়িতে। নুঙ্গি শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। মঙ্গলবার তাঁর সহযাত্রী সন্দীপ সরকারের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। 


অন্যদিকে নেপালে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আটকিয়ে বহু বাঙালি পর্যটক। মুক্তিনাথ দর্শনে গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলার বহু পর্যটক। নেপালের লেটে , গোসা, দানা ,মার্কাসহ প্রায় ১৫টির বেশি জায়গায় প্রবল বৃষ্টির এবং হড়পা বানের জেরে পাহাড়ি রাস্তায় ধস নেমেছে। প্রায় ৫ দিন ধরে অনবরত বৃষ্টির ফলে ধস নামে। একাধিক জায়গায় সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বহু পর্যটকদের গাড়ি, বাইকার ও টেকিং যাওয়া মানুষ। খাবার ও জল কষ্টে ভোগে বহু মানুষ। নেপাল সরকারের বিপর্যয় মোকাবিলা দল কাজ করছে। সকলকে নিরাপদে ফেরানোর চেষ্টা চলছে। হ্যাম রেডিও-র তরফ থেকে যোগাযোগ ও তাদের খাবারসহ অন্যান্য সাহায্য করা হচ্ছে। সোমবার অন্ধকার নেমে আসায় এখনও সবাইকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।