সন্দীপ সরকার, কলকাতা: পরীক্ষায় পাস করেছেন। শেষ হয়েছে এক বছরের ইন্টার্নশিপ। কিন্তু তাও সার্টিফিকেট না মেলার অভিযোগে আদালতের দ্বারস্থ হলেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ (R G Kar Medical College) থেকে পাস করা দুই জুনিয়র ডাক্তার। অতীতে অধ্যক্ষের অপসারণ চেয়ে আন্দোলন করার জেরেই আটকে রাখা হয়েছে, সার্টিফিকেট। অভিযোগ দুই পড়ুয়ার। মানতে নারাজ কর্তৃপক্ষ।


সার্টিফিকেট না মেলার অভিযোগ: MBBS-এর পাঠ্যক্রম শেষ। শেষ হয়েছে এক বছরের ইন্টার্নশিপও। কিন্তু তাও ইন্টার্নশিপ শেষ হওয়ার সার্টিফিকেট দিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। এই অভিযোগেই এবার আদালতের দ্বারস্থ হলেন আরজি কর হাসপাতাল থেকে পাস করা দুই জুনিয়র ডাক্তার। মৈনাক রায় ও চন্দ্রমৌলি ঝা, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ থেকে পাস করা দুই জুনিয়র ডাক্তার। প্রথম জনের ইন্টার্নশিপ মে মাসে এবং দ্বিতীয় জনের জুন মাসে ইন্টার্ণশিপ শেষ হয়েছে। কিন্তু দু-জনের দাবি,ইন্টর্নশিপ কমপ্লিশান সার্টিফিকেট না মেলায় মেডিক্যাল কাউন্সিলে রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন করতে পারছেন না তাঁরা। ফলে ডাক্তারি পাস করেও, ডাক্তারি করার এখনও অধরাই রয়ে গেছে এই দু-জনের। 


কিন্তু সার্টিফিকেট না মেলার কারণ কী? অভিযোগ, ২০২১-এর অক্টোবরে পড়ুয়া থাকাকালীন বিভিন্ন দাবিতে পড়ুয়াদের আন্দোলনে সামনের সারিতে ছিলেন এই দুজন। সেই আন্দোলন থেকেই অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিও ওঠে। দুজনেরই অভিযোগ, সেই প্রতিহিংসা থেকেই তাঁদের শংসাপত্র আটকে রেখেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। মামলাকারীর আইনজীবী বলেন, “সবাই পেয়ে গেছে। ওরা পাইনি। ইচ্ছাকৃতভাবে আটকে রাখা হয়েছে। প্রতিহিংসা করা হয়েছে বলে মনে করছি। আদালতে আবেদন করা হয়েছে।

যদিও দুই জুনিয়র ডাক্তারের তরফে তোলা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি ও হুগলির শ্রীরামপুরের তৃণমূল বিধায়ক সুদীপ্ত রায়। তিনি বলেন, “মৈনাকের বাবা-মা এসে দেখা করেছিলেন। সার্টিফিকেট এসে নিয়ে যেতে বলা হয়েছিল। দিনের পর দিন আসেনি। তাই পোস্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। চন্দ্রমৌলির সার্টিফিকেট আটকে রয়েছে, তার কারণ ইন্টার্ন থাকাকালীন বিভিন্ন বিভাগে ডিউটি করতে হয়। একটি বিভাগে ডিউটি সম্পূর্ণ করেননি। আন্দোলন করেছে।’’



চন্দ্রমৌলি ঝা-র পাল্টা দাবি, একমাত্র অর্থপেডিক ছাড়া হাসপাতালের সব বিভাগই তাঁকে ক্লিয়ারেন্স দিয়েছে। তাঁর প্রশ্ন, তিনি যদি ইন্টার্ন থাকাকালীন নিয়ম অনুযায়ী ডিউটি না করে থাকেন, তাহলে তা জানিয়ে কেন কর্তৃপক্ষ কোনও চিঠি দিল না? পাশাপাশি তাঁর বিস্ফোরক অভিযোগ, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের যে অধ্যক্ষের অপসারণ চেয়ে তাঁরা আন্দোলন করেছিলেন, তিনি অর্থপেডিক বিভাগেরই একজন অধ্যাপক এবং তাঁর কথাতেই অর্থপেডিক ডিপার্টমেন্টে সমস্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের এজলাসে দায়ের হয়েছে মামলা।


আরও পড়ুন: Jalpaiguri News: জলপাইগুড়িতে মায়ের মৃতদেহ কাঁধে ছেলে, তদন্ত কমিটি গঠন স্বাস্থ্য দফতরের