শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: পঞ্চায়েতের (Panchayat) টিকিট দেওয়ার নাম করে টাকা তোলা হচ্ছে। তাদের নাম জানতে পারলে রাজ্য নেতৃত্বকে জানানো হবে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলীয় সভায় বিস্ফোরক উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী। গতকাল কোচবিহারের দিনহাটার (Dinhata) চৌধুরীহাটে দলীয় সম্বর্ধনা সভায় যোগ দেন উদয়ন গুহ। সেখানে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী বলেন, বিবেকবান না হলে পঞ্চায়েত ভোটে টিকিট পাওয়া যাবে না। মেনে চলতে হবে শৃঙ্খলা। পঞ্চায়েত ভোটের আগে মন্ত্রীর এ হেন মন্তব্যে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
দরজায় কড়া নাড়ছে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগেই বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি। প্রার্থী করাতে টাকা নেওয়া হচ্ছে তৃণমূলে। প্রকাশ্যে বললেন দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ।
অন্যদিকে আবার কিছুটা সাফাইয়ের সুর শোনা গেল আরেক মন্ত্রীর গলায়। ২-৩জন খারাপ লোক মানেই গোটা দল খারাপ নয়, দাবি আরেক তৃণমূল বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের। তিনি বলেন, "সব দলেই ভাল-খারাপ লোক থাকতে পারে। খারাপ লোক ধরা পড়লে শাস্তি পাবে। কিন্তু, তার মানে একটা দল পুরো খারাপ হয়ে যায় না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্যায় করেন না।"
দু’দিন আগেই, পঞ্চায়েত ভোটে দাঁড়িয়ে থেকে বিরোধীদের প্রার্থী দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন উদয়ন গুহ। আর শনিবার দিনহাটার চৌধুরীহাটে এক কর্মিসভায়, নিজের দলের একাংশের বিরুদ্ধেই সরব হলেন তিনি। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী ও তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, "যারা টাকা সংগ্রহ করছে, তারা যেমন অপরাধী, যে লোকটা টাকা দিচ্ছে টিকিটের জন্য, সেও তার থেকে বেশি অপরাধী। আমরা জানতে পারলে তাঁর নাম, কলকাতায় জানিয়ে দেব যে, ইনি টাকা দিয়ে রেখেছেন।"
আরও পড়ুন, 'মিমি, নুসরতরা লুটেপুটে খাচ্ছে, এরা সম্পদ হলে দল করা যাবে না’, মন্ত্রীর মন্তব্যে অস্বস্তিতে তৃণমূল
এ প্রসঙ্গে কোচবিহারের বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসু বলেন, "তৃণমূলে টাকা ছাড়া কিছু হয় না। এসএসএসির ক্ষেত্রে যেখানে তৃণমূল সেখানেই টাকা। এখানে ব্লক সভাপতি ৫০ লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়। পঞ্চায়েত নির্বাচন, বিধানসভা নির্বাচনে সব প্রার্থীরা টাকা দেন, সবাই জানে। টাকা বাইরের কাউকে না দিয়ে ওনাকে দেওয়া হোক, এটাই হয়ত উনি বোঝাতে চেয়েছেন।"
প্রসঙ্গত, দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অনুব্রত মণ্ডল। তারপর থেকে কখনও আদালতে তোলার সময়, অনুব্রত মণ্ডলকে লক্ষ্য করে উঠেছে গরু চোর স্লোগান। কখনও হাসপাতালে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছে চটি। এরপর তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্য করেও চোর বলার অভিযোগ উঠেছে। যা নিয়ে সাঁকরাইল, সল্টেলেকের মতো বিভিন্ন জায়গায় গন্ডগোলও হয়েছে।