সন্দীর সরকার, কলকাতা : 'আমি আবার বলছি, যদি যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করে, অপেক্ষাকৃত কম যোগ্যদের চাকরি দেওয়া দুর্নীতি হয়,  তাহলে বাবা সেই সিস্টেমের অঙ্গ ছিলেন।' 


তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহর ( Udayan Guha ) এই মন্তব্য ঘিরেই গত কয়েকদিন ধরে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। একদিকে যখন নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে একের পর এক অভিযোগে কার্যত কোণঠাসা রাজ্যের শাসকদল, তখন বাম আমলের নিয়োগেও দুর্নীতির অভিযোগে পাল্টা সরব হয়েছে তৃণমূল। প্রশ্ন তোলাা হয়েছে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর কলেজের চাকরির নিয়োগপ্রক্রিয়া নিয়েও। ঠিক সেই সময়েই বিস্ফোরক এই মন্তব্য করেন উদয়ন গুহ, তাঁর বাবা বাম নেতা কমল গুহকে কাঠগড়ায় তুলতেও ছাড়েননি তিনি। এই মন্তব্যের পরই বিরোধী শিবির থেকে উঠেছে নিন্দার ঝড়। তবে শুধু বিরোধীরাই নন, অসন্তোষের আঁচ এবার উদয়নের নিজের ঘরেই। 


উদয়ন গুহর বিরুদ্ধে এবার বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন তাঁর ভাগ্নি উজ্জয়িনী রায়। বললেন, ' উদয়ন বাবুর মন্তব্যের সঙ্গে সহমত নই। এ কথা মানতে পারছি না যে, আমার দাদু কমল গুহ অযোগ্যদের চাকরি দিয়েছেন যোগ্যদের বঞ্চিত করে। আমাদের পরিবারের অনেকেই মানতে পারছেন না। সবাই খুব আশ্চর্য এ কথা শুনে। '  মামার দাবির তীব্র বিরোধিতা করে, দাদুর পাশেই দাঁড়ালেন মন্ত্রীর ভাগ্নি উজ্জয়িনী রায়! এমনকী উদয়ন গুহর পদত্যাগেরও দাবি তুললেন বিজেপি নেত্রী ভাগ্নি।


বিজেপি নেত্রী বললেন, ' মাননীয় উন্নয়ন মন্ত্রীর অনেক বয়স হয়েছে ওঁর পদত্যাগ করে তীর্থ করা উচিত। ওটাই এখন ওঁর জন্য আদর্শ। উনি ভুলভাল বকছেন। গত দু মাস ধরে আমরা দেখছি বিভিন্ন চাকরি কেলেঙ্কারিতে আমাদের শাসকদলের অনেক নেতা-নেত্রীকে ধরা হচ্ছে। সেখানে হয়তো উনিও যুক্ত আছেন। হয়তো না, উনিও যুক্ত আছেন। এখন নিজেরটা ঢাকার জন্য বাবাকে টেনে আনছেন। বাবাকে ছাড়া তো উনি জীবনে কিছুই করতে পারেননি।' 


মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে ব্রাত্য বসু, পার্থ ভৌমিক থেকে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে, পূর্বতন বাম সরকারকে লাগাতার নিশানা করে চলেছেন তৃণমূলের শীর্ষ স্থানীয় নেতা-নেত্রীরা। একই পথে হাঁটতে গিয়ে, নিজের বাবা, বাম আমলের রাজ্যের মন্ত্রী, দাপুটে ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা কমল গুহকে নিশানা করে বিতর্কে জড়িয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। যার জেরে বিরোধী দলের লাগাতার সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। কিন্তু, এবার কার্যত উদয়নের একেবারে উল্টো সুর শোনা গেল তাঁর পরিবারের এক সদস্যের মুখেই। মামার বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করলেন ভাগ্নি।