সন্দীপ সমাদ্দার, পুরুলিয়া: তপন কান্দু খুনের (Tapan Kandu Death case) মামলায় পুরুলিয়া সংশোধনাগারেই (Undertrial Prisoner Death In Purulia Correctional Centre) মৃত্যু হল বিচারাধীন বন্দির। পুরুলিয়া সংশোধনাগারে বন্দি ছিলেন সত্যবান প্রামাণিক। আজ ভোরে সংশোধনাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েন সত্যবান প্রামাণিক। পুরুলিয়া মেডিক্যাল কলেজে (Purulia Medical College And Hospital) নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। গত বছর খুন হন ঝালদা পুরসভার কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু। গত বছর ১৩ এপ্রিল খুনে জড়িত থাকার অভিযোগে সত্যবান প্রামাণিককে গ্রেফতার করে সিবিআই। সত্যবান প্রামাণিককে ষড়যন্ত্রকারী বলে চার্জশিটে দাবি করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সিবিআই হেফাজত শেষে জেল হেফাজতে ছিলেন সত্যবান প্রামাণিক। ডায়াবেটিস-সহ নানা রোগে ভুগছিলেন সত্যবান, পুরুলিয়া সংশোধনাগার সূত্রে খবর।

  


কী ঘটেছিল?
জেল কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, সত্যবানের দীর্ঘদিন ধরে ডায়ালিসিস চলছিল। তাঁর 'সুগার' ছিল। জেলে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। আজ সকাল সাড়ে ৫টা নাগাদ হঠাৎ তিনি অসুস্থ বোধ করেন। তড়িঘড়ি তাঁকে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে আনা হয়। তার পরই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তপন কান্দু খুনের ঘটনায় সিবিআইয়ের হাতে প্রথম গ্রেফতার হয়েছিলেন সত্যবান প্রামাণিক। ঝালদা শহরের বুকে তাঁর একটি হোটেল রয়েছে বলে খবর। হোটেলে বসেই তিনি এই খুনের পরিকল্পনার ছক কষেছিলেন বলে সিবিআই সূত্রে খবর। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, তাঁর বাড়ির লোক এখনও এসে পৌঁছয়নি। ময়নাতদন্তও শেষ হয়নি।


ঝালদার ঘটনা...
শেষ পৌরসভা নির্বাচনে ঝালদায় তপন কান্দুর বিরুদ্ধে তৃণমূল প্রার্থী ছিলেন তাঁরই ভাইপো দীপক কান্দু। পৌর নির্বাচনে ভাইপোকে হারিয়ে জয়ী হন কাকা তপন। এরপর গত ১৩ মার্চ, বোর্ড গঠনের আগে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হয়ে যান তিনি। তদন্ত শুরু হলে একে একে গ্রেফতার হন দীপক, তাঁর বাবা নরেন কান্দু, ঝালদার ধূপ ব্যবসায়ী আশিক খান, হোটেল মালিক সত্যবান প্রামাণিক এবং ভাড়াটে খুনি যোগসূত্রে অভিযুক্ত কলেবর সিংহ। গত সেপ্টেম্বরে ‘ভাড়াটে খুনি’ জাবিরের নাগাল পেল সিবিআই। ঝালদায় পৌরবোর্ড দখল করতে, তপন কান্দুকে, তৃণমূল খুন করিয়েছে বলে শুরু থেকে অভিযোগ করেছিল নিহতের পরিবার। তপনকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল, এমন অভিযোগও ওঠে। তাতে নাম জড়ায় ঝালদা থানার আইসি সঞ্জীব ঘোষের। ভাইরাল হয় একাধিক অডিও ক্লিপও। যদিও দীপক কাকাকে খুন করিয়েছেন, এই অভিযোগ মানতে নারাজ তাঁর মা। তাঁর দাবি, এর পিছনে নেপাল মাহাতো রয়েছেন বলে এবিপি আনন্দে দাবি করেন তিনি। তাঁর দাবি ছিল, কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। তাই তাঁর উপর রাগ ছিল নেপালের। তবে নেপাল বলেছিলেন, "তপন কান্দুর স্ত্রী সিবিআই চেয়েছিলেন। কোর্টের নজরদারি তদন্ত চেয়েছিলেন। এর সঙ্গে আমার বা কংগ্রেসের কোনও যোগাযোগ নেই। বাবি কান্দু প্রথমেই তো বলেছিলেন সিবিআই তদন্ত হোক।"


আরও পড়ুন:দীপান্বিতা অমাবস্যায় দুর্গা বোধন রক্ষিত পরিবারে, কালীপুজোর দিনে চলে শিবদুর্গার আরাধনা