সুদীপ চক্রবর্তী, ইসলামপুর (উত্তর দিনাজপুর) : এ যেন মানুষ মানুষেরই জন্য...। যুদ্ধ (War)-হানাহানিতে বিধ্বস্ত বিশ্ব। করোনা আতিমারির (Corona Pandemic) কোপের প্রভাব ফিকে হওয়ার আগেই নতুন করে সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়ে সকলে। হিংসা-ঘৃণার এক পৃথিবী যখন রোজের বেঁচে থাকার কারণ কেড়ে নিতে উদ্যত তখনই যেন মনুষ্যত্বকে বাঁচিয়ে রেখে মানবিকতার গুণগানের নতুন গল্প-কাহিনীগুলো সামনে চলে আসে। তেমনই ঘটনা উত্তর দিনাজপুরের (North Dianjpur) ইসলামপুরে (Islampur)।


বৃদ্ধ মা ও দুই মেয়ের আর্ত এক সংসার। অশীতিপর মা এখন আর পারেন না সংসারের হাল টানতে ভিক্ষাবৃত্তি (Beggar) করতে। দুই মেয়েই সংসারের হাল টানতেন ভিক্ষার হাত বাড়িয়ে। কিন্তু অল্প মানসিক ভারসাম্যহীন ছোট মেয়ে কনিকা মহন্ত প্রয়াত হন এক সপ্তাহ আগে। পরিবার জুড়ে শোকের এক লহর। এর মাঝেই জানাজানি হয় বাড়িতে রয়েছে অসংখ্য কয়েন, পুরনো দিনের টাকা। টাকা ভর্তি তিনটি ট্যাঙ্কের খোঁজ মেলে। হিংসার বিশ্বে যে খবর মিললে লুঠের কাহিনী হয়ে ওঠে রুঢ় বাস্তব চিত্রনাট্যের পরের পর্ব। কিন্তু এখানে দেখা গেল এক্কেবারে ভিন্ন চিত্র। গোটা গ্রামের মহিলা-বাচ্চা সবাই হাজির হলেন আর্তের বাড়িতে। সেখান গিয়ে সবাই মিলে হাত মেলালেন টাকা গুনতে।


মূলত উদ্ধার হওয়া অজস্র খুচরো পয়সা ও দশ টাকার নোট গুণতে প্রায় গোটা দিন কেটে যায় স্থানীয়দের। সবমিলিয়ে প্রায় লাখ-খানেক টাকা গোনা শেষের পরে গ্রামের লোকেরা জানালেন তারা তা ব্যাঙ্কে জমা করে দেবেন আর্ত পরিবারের নামে। যাতে সেই থেকে প্রাপ্ত টাকায় কিছুটা হলেও যদি সঙ্কট কমে আর্ত-ভিক্ষুক পরিবারের। কিছুটা যাতে সুষ্ঠু হয় ভবিষ্যতের দিনযাপন।



বৃদ্ধা মা ও বড় মেয়ের জীবন যাতে কিছুটা থিতু হয় সেজন্য স্থানীয়দের এমন উদ্যোগের খবর শুনে প্রশংসা সব মহলে।


জন লেনন তাঁর 'ইমাজিন'..-এ এরকম-ই স্বপ্নের দুনিয়াকে গানে বুনেছিলেন বোধ হয়। 


আরও পড়ুন- কতটা গুরুতর চোট? কেমন আছেন ভুবন বাদ্যকর?