সুদীপ চক্রবর্তী, উত্তর দিনাজপুর: গত ১৩ জুলাই ইসলামপুরের শ্রীকৃষ্ণপুর এলাকায় ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে ভর সন্ধ্যায় একটি ধাবায় ঢুকে ওই তৃণমূল নেতাকে গুলি করে খুন করেছিল দুষ্কৃতীরা বলে অভিযোগ। এদিকে তিন সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও, এখনও অধরা ইসলামপুরের তৃণমুল কংগ্রেস নেতার খুনীরা !
সমস্ত ঘটনা ঘটেছিল সিসিটিভি ক্যামেরার সামনে। দুস্কৃতীরা এসে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে যাওয়ার পরিষ্কার ফুটেজ পুলিশের হাতে আছে। তবুও অধরা ওই দুষ্কৃতীরা। নিহত তৃণমূল কংগ্রেস নেতা বাপী রায়ের পরিবার আর আস্থা রাখতে পারছে না পুলিশি তদন্তে। রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করে সিবিআই তদন্ত করানোর জন্য আদালতে যাওয়ার পরিকল্পনা নিচ্ছেন মৃতের পরিবার। পুলিশের তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে উঠছে প্রশ্নও। পুলিশি ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী দল বিজেপি সহ শাসক দলের নেতৃত্বও।
১৩ জুলাই সন্ধ্যায় শ্রীকৃষ্ণপুরে একটি ধাবায় ইসলামপুর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যার স্বামী বাপী রায় তৃণমুল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতাদের সাথে আলোচনায় বসেছিলেন। আলোচনায় ছিলেন রামগঞ্জ ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের স্বামি ও উপ প্রধানের স্বামী সহ জনা দশেক স্থানীয় তৃনমুল কংগ্রেস নেতৃত্ব ও গ্রাম পঞ্চায়েত বেশকিছু সদস্যও। আচমকা সেখানে স্বসস্ত্র দুষ্কৃতকারী এসে আক্রমন চালায়। এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে চালাতে প্রবেশ করে দুষ্কৃতীরা। তবে তাঁদের মূল লক্ষ্য ছিল বাপী রায়। বাপী রায়ের শরীর গুলিতে ঝাঝরা করে দেয় তাঁরা। ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয় রামগঞ্জ (২) গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের স্বামী সাজ্জাদ হুসেন। ঘটনাস্থলেই মারা যান বাপী রায়।
ঘটনায় পুলিশি তদন্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাপী রায়ের পরিবার। তাদের ধারণা, পরিকল্পিত ভাবে খুন করা হয়েছে বাপীকে। কোনও প্রভাবশালীর হস্তক্ষেপে ঘটনা ধামা চাপা দিতে চাইছে পুলিশ। পরিবারের প্রশ্ন, ঘটনার দিন বাপীকে ফোন করে ওই ধাবায় ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পুলিশ সেই ব্যক্তিকে কেন খোঁজ করছে না? বাপী রায় ধাবায় এসে বসেছে সেই খবর নিশ্চই ওই আলোচনা স্থলে থাকা কেউ খুনীদের জানিয়েছিল। পুলিশ কেনও সেই ব্যক্তির খোজ করল না? কেন আলোচনায় থাকা তৃণমূল নেতাদের ফোন বাজেয়াপ্ত করল না পুলিশ?
আরও পড়ুন, ভারতের ডাকটিকিটে পেয়েছে স্থান, জলমগ্ন এবার কালনার লালজীর মন্দির !
খুনের পরে বিধাননগর থেকে অনিকেত সরকার নামের এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদি এই খুনে বিধাননগর যোগ থাকে তবে বাপীর বিধাননগরের মূল পরিচিতদের কেনও ধরছে না পুলিশ? কেনও শুধুমাত্র একজন গ্রেফতার হল ঘটনায়। খুন করতে আসা দুষ্কৃতীরাই বা কোথায় গেল? সিসিটিভি ফুটেজে তাদের পরিষ্কার ছবি থাকা সত্বেও কেন পুলিশ খুনীদের কাউকে গ্রেফতার করতে পারছে না? এই ধরনের একাধিক প্রশ্ন নিয়ে সিবিআই তদন্তের জন্য আদালতের দারস্থ হওয়ার পরিকল্পনা করছে মৃত বাপী রায়ের পরিবার। পুলিশি ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী দল বিজেপি সহ শাসক দল তৃণমূলের নেতৃত্বও।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।