রাজা চট্টোপাধ্যায়,শিবাশিস মৌলিক, কলকাতা: একই এনক্লোজারে 'সীতা'র পাশে 'আকবর'। কোনও ব্যক্তিবিশেষ নন, সীতা নামক সিংহী এবং আকবর নামক সিংহের নামকরণে প্রশ্ন। সেই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। শুক্রবার বিষয়টি নিয়ে আদালতে গিয়েছে তারা। কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে আবেদন জানানো হয়েছে। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি বিষয়টি নিয়ে শুনানি রয়েছে। (Siliguri Safari Park)


শিলিগুড়ি সাফারি পার্কের এনক্লোজারে 'সীতা' নামের একটি সিংহী এবং 'আকবর' নামের একটি সিংহ রয়েছে। তাঁদের নামকরণে আপত্তি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছে VHP. পশ্চিমবঙ্গ বন দফতর এবং সাফারি পার্কের ডিরেক্টরকে মামলায় পক্ষও করা হয়েছে। আদালতে ওই মামলা গৃহীত হয়েছে বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের বেঞ্চে। ২০ ফেব্রুয়ারি বিষয়টি নিয়ে শুনানি হবে। (Vishwa Hindu Parishad)


এ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ বনদফতরের প্রতিক্রিয়া চাওয়া হয়। তারা জানিয়েছে, অতি সম্প্রতিই ত্রিপুরা সিপাহিজেলা জুলজিক্যাল পার্ক থেকে ওই সিংহী এবং সিংহকে আনা হয় শিলিগুড়ি সাফারি পার্কে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি তারা সেখানে এসে পৌঁছে। এখানে আনার পর নতুন নামকরণ হয়নি। বরং ত্রিপুরাতেই তারা ওই নামে পরিচিত ছিল।


আরও পড়ুন: KMC Budget Deficit: পূরণ হল না আয়ের লক্ষ্যমাত্রা, ফের কলকাতা পুরসভার বাজেটে ঘাটতি


যদিও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের যুক্তি, মুঘল সম্রাটের নাম আকবর। সীতা নামটি উঠে এসেছে বাল্মীকির 'রামায়ণ' থেকে, যিনি কি না দেবীরূপে পুজিত হন। আদালতে তারা জানিয়েছে, বন দফতর ওই সিংহী এবং সিংহের যে নামকরণ করেছে এবং তাদের যেভাবে একসঙ্গে রাখা হয়েছে, তা হিন্দুদের জন্য অবমাননাকর। ওই সিংহী এবং সিংহের নাম অবিলম্বে পাল্টাতে হবে বলে আবেদন জানিয়েছে তারা।


বিশ্ব হিন্দু পরিষদের জেলা সভাপতি দুলাল চন্দ্র রায় বলেন, "বেঙ্গল সাফারি পার্কে যে সিংহী আনা হয়েছে, তার নাম রাখা হয়েছে সীতা। এতে আমাদের হিন্দু ধর্মের উপর আঘাত করা হয়েছে। এই নাম নিয়ে আমাদের তীব্র আপত্তি রয়েছে, তাই উচ্চ আদালতের দারস্থ হলাম।" মামলার আইনজীবী শুভঙ্কর দত্ত বলেন, "ত্রিপুরা থেকে সিংহ দু'টিকে আনা হয়েছে। সরসারি নথিতে প্যানথেরা লায়ন মেল এবং ফিমেল বলে উল্লেখ ছিল। আইডি নম্বরও ছিল তাতে। কিন্তু এখানে আসার পর 'সীতা' এবং 'আকবর' নাম দেওয়া হয়েছে। আদালতে নাম পাল্টানোর আবেদন জানিয়ে মামলা করেছি।"


এ প্রসঙ্গে প্রান্ত সংগঠন মন্ত্রী তথা বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা অনুপকুমার মণ্ডল বলেন, "সরকার একটি সিংহী এবং সিংহ এনেছে ত্রিপুরা থেকে। ত্রিপুরাকে দু'টি বাঘ দেওয়া হয়েছে। ত্রিপুরায় সিংহের নাম ছিল 'রাম', সিংহীর 'সীতা'। বাংলায় এসে সেটা 'আকবর' এবং 'সীতা' হল। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানানো হল। সেই নিয়ে মুখরোচক লেখা বেরোচ্ছে। সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। এর প্রতিবাদ জানিয়েছি। তার পর হাইকোর্টে গিয়েছি গতকাল। হিন্দুি দেব-দেবীর নামে কোনও পশুর নামকরণ চলবে না। এর নেপথ্যে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে।" বিষয়টি নিয়ে তরজা শুরু হয়েছে।