কলকাতা: লোকসভা নির্বাচনের আগে সরগরম বাংলার রাজনীতি। তার মধ্যেই শহরের একাধিক জায়গায় রহস্যজনক পোস্টার। রাজ্যে বিকল্প রাজনীতির দাবি জানিয়ে পোস্টার, যাতে লেখা রয়েছে, 'বাংলার ভবিতব্য, বিকল্প রাজনীতি। বাংলায় বিকল্প রাজনীতি। শহরে পোস্টার-রহস্যের মধ্যেই ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করলেন কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচী। বাংলায় বিকল্প রাজনীতির পক্ষে তিনিও সওয়াল করছেন কিনা উঠছে প্রশ্ন। (Koustav Bagchi)
ফেসবুক পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন করলে এবিপি আনন্দে কৌস্তভ বলেন, "বিকল্প রাজনীতি, পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে এই কথাটি আমি কয়েক মাস আগেই বলেছিলাম। লাগাতার এই কথা বলিও আমি। কারণ আমি মনে করি, আগামী দিনে পশ্চিমবঙ্গের ভবিতব্য বিকল্প রাজনীতি। আমার মনে হয় যে, পশ্চিমবঙ্গে বিরোধী রাজনীতির পরিসরে একটা বড় শূন্যতা রয়েছে। কোনও বিরোধী দল সেই শূন্যস্থান পূরণ করতে পারছে না। আজ শহর জুড়ে, বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে পোস্টার পড়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। আমি দায় এড়াব না যে বিকল্প রাজনীতির কথা বলিনি আমি। আগেও বলেছি, এখনও বলছি, আগামী দিনেও বলব। আমার কথা যদি কাউকে উদ্বুদ্ধ করে থাকে, তাহলে ভাগ্যবান মনে করব নিজেকে। বাংলার মানুষ আমার কথায় সমর্থন জানাচ্ছেন, তাতে ভাগ্যবান বোধ করছি।" (Lok Sabha Elections 2024)
কিন্তু এ প্রসঙ্গে কংগ্রেসেরই সৌম্য আইচ রায় বলেন, "উনি ওঁর মতো কথা বলেছেন। আমি সেই নিয়ে কিছু বলব না। কিন্তু মানুষই বিকল্প খোঁজেন। কাউকে বিকল্প তৈরি করে দিতে হয় না। মানুষ বিকল্প বেছে নেন। আন্দোলনই পথ দেখায়। পশ্চিমবঙ্গে অন্ধকারে যদি কেউ পোস্টার দিয়ে বিকল্প রাজনীতি খোঁজেন, সেটা তাদের ব্যাপার। কিন্তু ময়ূর সিংহাসনের লড়াই এ চলছে এটা আমরা জানি। হতাশা থেকে অন্ধকারের মধ্যে নতুন রাজনীতির জন্ম দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। কারও নাম নেই, কিছু নেই, তাহলে কি আত্মবিশ্বাস নেই? বাধাটা কোথায়? বিকল্প রাজনীতির কথা মানুষ বলবেন, মানুষ খুঁজে নেবেন। এগুলো দেখে মনে হচ্ছে, একটা কথা ভাসিয়ে দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা। কেউ কেউ এই সুযোগে বহমান গঙ্গার জলে হাত ধুয়ে নিতে চাইছেন।"
কে বা কারা পোস্টার টাঙিয়েছে, তা যদিও জানা যায়নি । তবে কৌস্তভের পোস্ট ঘিরে জল্পনা শুরু হয়েছে। কারণ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী এবং দিল্লির কংগ্রেস নেতৃত্বের একাধিক সিদ্ধান্তের বিরোধিতা আগেই করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। তাই এই পোস্টার নিয়ে প্রশ্ন করলে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) বলেন, "কৌস্তভ বাগচী কংগ্রেসে থেকে কংগ্রেসকে লাইনে আনার চেষ্টা করছেন। কিন্তু উনি পারবেন না। কারণ কংগ্রেসের মালিক সনিয়া গাঁধী, রাহুল গাঁধীরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর ভাইপোর সঙ্গে চার বার বিরিয়ানি খেয়েছেন। কৌস্তভের প্রতি আমার শুভেচ্ছা রয়েছে। কিন্তু বাংলায় শেষ পর্যন্ত বিজেপি-ই বিকল্প। কারণ কংগ্রেস, সিপিএম এবং তৃণমূলই, এরা সবাই টেস্টেট অ্যান্ড রিজেক্টেড।"
এদিন শুভেন্দু আরও বলেন, "বেকারত্ব, দুর্নীতি যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, ডাবল ইঞ্জিন সরকার ছাড়া বাংলা বাঁচবে না। সিপিএম ২ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ রেখে গিয়েছিল, মমতা তা ৬ লক্ষ কোটি করেছেন। সিপিএম ১ কোটি বেকার রেখে গিয়েছিলেন, মমতা ২ কোটি করেছেন। সিপিএম ৫ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমির রেখে গিয়েছিল, মমতা তা করেছেন ৫০ লক্ষ। এর একমাত্র সমাধান হতে পারে বিজেপি-র ডাবল ইঞ্জিন সরকার, অসম এবং উত্তরপ্রদেশের মতো। কৌস্তভবে বলব, লোকসভা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। ৪০০ আসন নিয়ে ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী। তখন আমাদের সঙ্গে আসতে হবে।"