কলকাতা: আবারও নবান্ন এবং রাজভবনের মধ্যে সংঘাতের ছায়া। প্রধান সচিব নন্দিনী চক্রবর্তীর পর এবার প্রেস সচিব শেখর গঙ্গোপাধ্যায়কে অব্য়াহতি দিলেন রাজ্যপাাল সিভি আনন্দ বোস। শেখরকে সরানোর প্রেক্ষিতে রাজভবনের তরফে কোনও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি এখনও পর্যন্ত। তবে প্রেস সচিবের অব্যাহতির নেপথ্যে নবান্ন-রাজভবন সংঘাতের ছায়া দেখছে ওয়াকিবহাল মহল।
রাজ্য সরকার মনোনীত আধিকারিককে অব্যাহতি দেওয়ায় নতুন জল্পনা শুরু হয়েছে
এর কারণ হল, প্রধান সচিব নন্দিনী চক্রবর্তীকে সরানোর প্রেক্ষাপটে, রাজভবনের সঙ্গে রাজ্য সরকারের টানাপোড়েন চলেছিল। শুধু তাই নয়। বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলির অর্থনৈতিক সংক্রান্ত বিষয়ে রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো, পঞ্চায়েত ভোটে অশান্তির প্রেক্ষাপটে কোচবিহার থেকে ক্যানিং ছুটে যাওয়া, যাবতীয় ইস্যুতে রাজভবনের সঙ্গে শাসকপক্ষের সংঘাত সামনে এসেছে। এবার রাজ্যপাল তাঁর প্রেস সচিবের পদ থেকে রাজ্য সরকার মনোনীত আধিকারিককে অব্যাহতি দেওয়ায় নতুন জল্পনা শুরু হয়েছে।
শেখরকে সরানো নিয়ে রাজভবনের তরফে এখনও পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি। তবে সূত্রের খবর, তাঁর কাজে সন্তুষ্ট নন রাজ্যপাল। রাজ্যপালের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারির পদও এখনও খালি পড়ে রয়েছে। নন্দিনীকে সরানোর পর তাঁর জায়গায় এখনও পর্যন্ত কাউকে আনা হয়নি। নবান্নের তরফে বেশ কিছু নাম সুপারিশ করা হলেও, রাজ্যপালের মনঃপুত হয়নি বলে খবর। এবার শেখরকেও সরিয়ে দিলেন রাজ্যপাল।
নন্দিনীকেও এভাবেই অকস্মাৎ সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন রাজ্যপাল। সেই সময় গুঞ্জব ছড়ায় যে, বাংলায় দায়িত্বে আসার পর রাজ্যের তৃণমূল সরকারের সঙ্গে গোড়ায় সুসম্পর্কই গড়ে ওঠে রাজ্যপালের। মিষ্টি পাঠানো থেকে বাংলা শিখতে আগ্রহী রাজ্যপালের জন্য প্রতীকী হাতেখড়ি অনুষ্ঠাবনের আয়োজন, রাজ্যের তরফে চেষ্টায় ত্রুটি ছিল না। রাজভবন এবং নবান্নের মধ্যে সেই সময় নন্দিনীই সেতুবন্ধনের মাধ্যম হয়ে ওঠেন বলে জানা যায়। রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যপালের এউ সুসম্পর্ক ভাল ভাবে নেননি বঙ্গ বিজেপি-র নেতৃত্ব। প্রকাশ্যে ক্ষোভও প্রকাশ করেন তাঁরা। তার পর দিল্লিতে রাজ্যপালকে জরুরি সাক্ষাতে ডেকে পাঠা অমিত শাহ। আর তার পরই নন্দিনীকে সরিয়ে দেন রাজ্যপাল।
শিক্ষাক্ষেত্রে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ নিয়েও টানাপোড়েন অব্যাহত
রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পরিচালনার ক্ষেত্রে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এর আগে, চলতি জুলাই মাসেই রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন বিচারপতি হিসেবে প্রাক্তন বিচারপতি শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়কে নিয়োগ করেন রাজ্যপাল। সেই নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। শিক্ষাবিদদের একাংশও রাজ্যপালের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেন। এই নিয়োগ সম্পূর্ণ বেআইনি বলে দাবি করেন তাঁরা।