কলকাতা: রাজ্য এবং রাজভবনের সংঘাতে ইতি পড়ার লক্ষণ নেই। বরং আরও এক ধাপ চড়ল পারদ। পূর্বসূরি জগদীপ ধনকড়ের (Jagdeep Dhankhar) পথে হেঁটে, ধূপগুড়িতে তৃণমূলের জয়ী প্রার্থীকে শপথগ্রহণ করাতে স্পিকারের পরিবর্তে ডেপুটি স্পিকারকে চিঠি দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (CV Ananda Bose)। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে (Biman Banerjee) বাদ দিয়ে বিধানসভায় ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিলেন রাজ্যপাল বোস। সেই নিয়ে নতুন করে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। বিধানসভার অধ্যক্ষের অসম্মানের অভিযোগ।
মঙ্গলবার বিষয়টি সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে, ধূপগুড়িতে সম্প্রতি জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের নির্মলচন্দ্র রায়। একটি একটি করে দিন পেরিয়ে গেলেও, এখনও শপথগ্রহণ হয়নি তাঁর। সোমবার শেষ মেশ চিঠি পেয়েছেন তিনি। কিন্তু তাঁকে শপথগ্রহণ করাতে বিধানসভায় যে চিঠি দিয়েছেন রাজ্যপাল বোস, তা স্পিকার নয়, ডেপুটি স্পিকারের উদ্দেশে লেখা হয়েছে। সেই নিয়েই বিতর্ক শুরু হয়েছে। আশিস সাফ জানিয়েছেন, "বিধানসভার অধ্যক্ষকে অসম্মান করা হয়েছে। আমি শপথগ্রহণ করাব না। অতীতে যা করেছি, এবারও তা-ই করব।" এই মুহূর্তে বীরভূমে রয়েছেন আশিস। তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হলেও, তা পালনে অপারগ থাকবেন বলে জানিয়েছেন।
রাজ্যপাল বোসের এই পদক্ষেপ, তাঁর পূর্বসূরি ধনকড়ের আমলের স্মৃতি ফিরিয়ে আনছে। কারণ তৃণমূলের টিকিটে বাবুল সুপ্রিয় বলিগঞ্জ থেকে জয়ী হওয়ার পর, তাঁর শপথগ্রহণ ঘিরেও এমনই পরিস্থিতি দেখা দিয়েছিল। বাবুলকে শপথগ্রহণ করাতে ডেপুটি স্পিকারকে চিঠি লিখেছিলেন ধনকড়। তাতে রাজি হননি আশিস। এর পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হস্তক্ষেপ করতে হয়। তাতে স্পিকারই শেষ মেশ শপথগ্রহণ করান বাবুলকে।
আরও পড়ুন: SSC Case: ৩৫টি ভুয়ো অ্যাকাউন্ট থেকে লেনদেন, যুক্ত ছিলেন পার্থও, নিয়োগ দুর্নীতিতে CBI রিপোর্ট
বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "আমি রাজভবনের প্রতিনিধি নই। রাজ্যপালের মুখপাত্রই নই আমি। রাজ্যপাল কি এক্তিয়ার বহির্ভূত কিছু করেছেন? রাজ্যপাল হয়তো মনে করেছেন, ডেপুটি স্পিকারের পদটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হাউসের প্রতি তাঁরও দায়বদ্ধতা রয়েছে। তাঁকেও যে আরও শৃঙ্খলাপরায়ণ হতে হবে, তার জন্যই হয়ত এই মর্যাদা দিয়েছেন।"
স্পিকারকে বাদ দেওয়া নিয়ে অন্য তত্ত্বও তুলে ধরেন শমীক। কটাক্ষের সুরে বলেন, "স্পিকারের তো দৃষ্টিশক্তির অভাব রয়েছে! কৃষ্ণকল্যাণী, মুকুল রায়কেও এখনও বিজেপি বলে মনে করছেন। দেখতে বোধহয় একটু সমস্যা আছে ওঁর। কাকে শপথ গ্রহণ করাতে গিয়ে, কাকে করাবেন, পরে আবার চক্রান্তের গল্প উঠে আসবে। একটা বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তার জন্যই হয়ত রাজ্যপাল স্পিকারকে ভরসা করতে পারেননি।"