কলকাতা: কিছু দিন আগে এসে লোকসভা নির্বাচনে আসনের লক্ষ্য়মাত্রা বেঁধে দিয়ে গিয়েছিলেন। এ বার ২৫ বৈশাখ, রবীন্দ্রজয়ন্তীতে (Rabindra Jayanti)  বাংলায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। কবিগুরুকে শ্রদ্ধা জানাতে জোড়াসাঁকো ঠাকুর বাড়িতে দেখা গেল তাঁকে। দিনভর রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে আয়োজিত একাধিক অনুষ্ঠানেও থাকবেন তিনি। তবে তাঁর এই সফরকে রাজনৈতিক কৌশলের অংশ বলেই উল্লেখ করলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। 


রবীন্দ্র জয়ন্তী উপলক্ষে সকালেই জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে যান ফিরহাদ


মঙ্গলবার রবীন্দ্র জয়ন্তী উপলক্ষে সকালেই জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে যান ফিরহাদ। সেখানে রবীন্দ্রনাথের আবক্ষ মূর্তিতে মাল্যদান করেন তিনি। জোড়াসাঁকোয় শাহের পৌঁছনো নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাইলে ক্ষোভ উগরে দেন ফিরহাদ। বলেন, "মণিপুর বিজেপি-র রাজ্য। উনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। জাতি দাঙ্গা হচ্ছে সেখানে। লুঠপাট চলছে। প্রচুর সরকারি সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে। করা হয়েছে অগ্নিসংযোগ। সেখানে যাওয়ার দরকার ছিল ওঁর। অথচ সেখানে না গিয়ে, বাংলায় আসছেন। ২০২৪-এ লোকসভা নির্বাচন। তাই রাজনীতি করছেন।"


কিছু দিন আগেই, বঙ্গসফরে এসেছিলেন শাহ। বীরভূমে দাঁড়িয়ে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি-র জন্য রাজ্য থেকে ৩৫ আসনের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিলেন। সে প্রসঙ্গে ফিরহাদের বক্তব্য, "৩৫ হবে না ওঁদের। স্বপ্ন হয়েই থেকে যাবে। বাঙালির ঘরে যত ভাইবোন সব এক হোক, এক হোক।" বাংলার মানুষ বিভেদের রাজনীতি মেনে নেন না বলেও মন্তব্য করেন ফিরহাদ। বলেন, "বাঙালির আবেগকে নাড়া দিতে পারবেন না ওঁরা। ২০২১-এও পারেননি। ২০২৪-এও পারবেন না।"


আরও পড়ুন: “কোনও দিন কর্তৃত্ব করতে হয়নি, ভালোবাসা দিয়ে মন হরণ করেছিলেন”


যদিও ফিরহাদের এই মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর কথায়, "কে রাজনীতি করছে, বোঝা যাচ্ছে। গোর্খা, রাজবংশী, কুড়মি, মতুয়ারা কেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন? কেন ভবিষ্যতের শিক্ষকরা আন্দোলন করছেন? কে বিভেদ করছে, বোঝা যাচ্ছে। একটা অযোগ্য সরকার, কোনও নীতি নেই। কর্মপদ্ধতি নেই। অন্যকে দোষ দিয়ে সময় কাটছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে ধর্নায় বসছেন। আর তাঁর যে মেয়র, কোনও সমস্যারই সমাধান করতে পারেন না।"


পেট্রোপোল সীমান্তে রবীন্দ্রজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা শাহের


সোমবার মধ্যরাতে কলকাতায় এসে পৌঁছন শাহ। এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ জোড়াসাঁকো পৌঁছন। দুপুরে পেট্রোপোল সীমান্তে রবীন্দ্রজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। তার পর সন্ধেয় সায়েন্স সিটিতেও বিশেষ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। তবে তাঁর এই সফর ঘিরে রাজনীতির পারদ চড়ছে। এ দিন জোড়াসাঁকোয় শাহের পাশে দেখা গিয়েছে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীতেও। রীতিমতো পরিকল্পনা করে, রবীন্দ্রজয়ন্তীতে বাঙালির কাছাকাছি পৌঁছতেই এই সফর বলে দাবি করছেন রাজনৈতিক মহলের অনেকেই।