কলকাতা: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দুপুরে রাজভবন অভিযান তৃণমূলের। তার আগে উত্তরবঙ্গে পৌঁছে গেলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (Partha Bhowmick)। লাগাতার ভারী বৃষ্টি এবং সিকিমে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে নাজেহাল অবস্থা। বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে উত্তরবঙ্গে। সেখানকার পরিস্থিতি পরিদর্শন করতেই গিয়েছেন বলে জানিয়েছেন রাজ্য। যদিও তা নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে জোড়াফুল শিবির।
প্রাপ্য বকেয়ার দাবিতে দিল্লির ধর্না-কর্মসূচি থেকেই রাজভবন অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক। বৃহস্পতিবার দুপুরে ১ লক্ষ লোকজন এবং বঞ্চিতদের চিঠি নিয়ে রাজভবনের উদ্দেশে রওনা দেবে তৃণমূল। তার আগেই উত্তরবঙ্গ পৌঁছে গিয়েছেন রাজ্যপাল। সেই নিয়ে তাঁকে কটাক্ষ করেন রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক (Partha Bhowmick)। পার্থ বলেন, "অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে প্রতিমন্ত্রী পালাচ্ছেন, রাজ্যপালও পালাচ্ছেন। গরিব মানুষের হকের টাকা চাইতে যাচ্ছেন অভিষেক। তাঁকে হেনস্থা করা হচ্ছে। জবাব দিতে পারবেন না বলেই পালাচ্ছেন।" রাজ্যপালকে পর্যটক বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এ নিয়ে পাল্টা কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিজেপি। দলের রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "পার্থ ভৌমিক বাধ্য হয়ে এই বিবৃতি দিচ্ছেন। দিল্লিতে ওঁদের ফ্লপ শো হয়েছে। ওভাবে আন্দোলন হয় না। আমরা রাজনৈতিক ভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধী। কিন্তু তাঁর থেকে সামান্য আন্দোলনের শিক্ষাও নেননি ওঁরা। নিজেদের সাফল্য প্রমাণ করতে গিয়ে কোথায় পৌঁছে গিয়েছেন, তা সকলের জানা। রাজ্যপাল সংবেদনশীল অনুভূতিপ্রবণ মানুষ। তিনিই সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে ঠিকই কাজ করেছেন। চাকরি চলে যেতে পারে জেনেই পার্থ এমন মন্তব্য করেছেন।"
আরও পড়ুন: 'আমি পর্যটক, লোকেদের অবস্থা দেখতে এসেছি' খোঁচা রাজ্যপালের
পার্থর কটাক্ষ নিয়ে মুখ খোলেন রাজ্যপালও। তিনি বলেন, "হ্যাঁ আমি পর্যটক। মানুষের অবস্থা দেখতে এসেছি। আমার জুনিয়র অ্যাপয়েন্টিদের মধ্যে কেউ যদি আমার সঙ্গে পর্যটক হিসেবেও থাকতেন! রাজ্যের মানুষের অবস্থা দেখে থাকতে না পেরে দিল্লি থেকে চলে এসেছি।" উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি দেখেই দিল্লি সফর কাটছাঁট করে চলে এসেছেন বলে জানান। এদিন শ্বেতিঝোরার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন রাজ্যপাল। কথা বলেন স্থানীয়দের সঙ্গে।
লাগাতার ভারী বৃষ্টি এবং সিকিমে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে বাঁধ ভাঙার প্রভাব পড়ছে উত্তরবঙ্গের একাধিক এলাকায়। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে এই মুহূর্তে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে কালিম্পং-সিকিম। কালিম্পঙের তিস্তা বাজার ও মেল্লি এলাকায় ধস নামায় ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক পুরোপুরি বন্ধ। কাদাজলে ডুবে গিয়েছে বহু গাড়ি। রাস্তা ভেঙে দু’ ফাঁক হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও মুছে গিয়েছে জাতীয় সড়কের অস্তিত্ব। গাছ ভেঙে ঢুকে গিয়েছে বাড়ির ভিতরে। দোতলা বাড়ি তাসের ঘরের মতো ভেঙে চুরমার। এদিন এলাকা পরিদর্শনে যান GTA চেয়ারম্যান অনীত থাপাও। পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ, তা ভাবতেও পারেননি বলে তিনি জানিয়েছেন।