কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, হিন্দোল দে ও সন্দীপ সরকার, রানাঘাট ও বনগাঁ: পুরভোটে (Municipal Election) বিজেপির (BJP) হেভিওয়েট নেতাদের কেল্লা চুরমার করে দিয়েছে তৃণমূল (TMC)। একটি পুরসভাও দখল করতে পারেনি গেরুয়া শিবির। সেই সঙ্গে ভরসার গড় মতুয়া-অধ্যুষিত এলাকা থেকেও কার্যত মুছে গেল বিজেপি। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের সময় থেকেই মতুয়া-অধ্যুষিত এলাকায় বিজেপির প্রভাব বাড়তে শুরু করে। লোকসভা ভোটে মতুয়া অধ্যুষিত বনগাঁ ও রানাঘাট তৃণমূলের থেকে ছিনিয়ে নেয় গেরুয়া শিবির। গত বছরের বিধানসভা ভোটেও মতুয়া অধ্যুষিত বনগাঁ ও রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ১২টি আসনে জয়ী হয় বিজেপি। কিন্তু এবার পুরভোটে বিজেপির এই গড়েই থাবা বসাল তৃণমূল।
২০১৯-এর লোকসভা ভোটের পর থেকেই রাজ্যের মতুয়া ভোটের বড় অংশ বিজেপির দিকে। বাংলাদেশের ওড়াকান্দিতে মতুয়া পূণ্যতীর্থে যান খোদ নরেন্দ্র মোদি। অমিত শাহ মতুয়া মন জয়ে বনগাঁয় সভা করেছেন। মতুয়া অধ্যুষিত বনগাঁ ও রানাঘাট, দুই কেন্দ্রেই এখন বিজেপি সাংসদ। কিন্তু, সাম্প্রতিককালে আবার রাজ্য কমিটি গঠন নিয়ে বিজেপির মতুয়া বিধায়কদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়। মতুয়া ঠাকুর বাড়ির সদস্য শান্তনু ঠাকুর প্রকাশ্যেই ক্ষোভপ্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন লোকসভায় আটে সাত থেকে পুরভোটে বিজেপি 'শূন্য' উত্তরবঙ্গ
এই আবহেই পুরভোটে মতুয়া অধ্যুষিত নদিয়ার ১০টি পুরসভার মধ্যে বিজেপি একটিতেও জিততে পারল না। প্রাপ্ত ওয়ার্ডের নিরিখে তারা বামেদেরও পিছনে। বামেরা যেখানে ৮টি ওয়ার্ডে জিতেছে, সেখানে বিজেপি পেয়েছে মাত্র ৫টি ওয়ার্ড।
মতুয়া অধ্যুষিত উত্তর ২৪ পরগনার ২৫টি পুরসভার মধ্যেও বিজেপি কোনওটিতেই জেতেনি। এখানেও প্রাপ্ত ওয়ার্ডের নিরিখে তারা বামেদের পিছনে। বামেরা ১৬টি ওয়ার্ডে জিতেছে। বিজেপি ও কংগ্রেস পেয়েছে ৪টি করে ওয়ার্ড।
মোদি মন্ত্রিসভার সদস্য শান্তনু ঠাকুর পুরভোটে ডাহা ফেল করলেন। জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের কেন্দ্র বনগাঁর মধ্যে পড়ে তিনটি পুরসভা, বনগাঁ, কল্যাণী ও হরিণঘাটা। তিনটিতেই বিপর্যয় ঘটেছে বিজেপির।