কাঁথি (পূর্ব মেদিনীপুর): পূর্ব মেদিনীপুরের (East Midnapur) কাঁথি পুরসভার (Contai Municipality) ভোটেও ঝড় তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC)। দীর্ঘ ৩১ বছর পর অধিকারী গড়ে ফুটল ঘাসফুল। কাঁথি পুরসভাতে আগেও দীর্ঘদিন ধরেই জিতে এসেছে তৃণমূল। কিন্তু সেই সময় অধিকারী পরিবার ছিল তৃণমূলেই। কিন্তু রাজ্যের গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই রাজনৈতিক পরিস্থিতির বদল হয়। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তারপর নন্দীগ্রামে ভোটে দাঁড়িয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়ে দেন শুভেন্দু অধিকারী। বর্তমানে তিনি বিধানসভার বিরোধী দলনেতা। 


শুভেন্দুর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের পর কাঁথি পুরসভায় এই প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল। তৃণমূলে থাকার সময় বিভিন্ন সময়ে শিশির অধিকারী থেকে শুরু করে সৌম্যেন্দু অধিকারী, পরিবারের একাধিক সদস্য কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যানের পদে ছিলেন। শেষবারও চেয়ারম্যান হন সৌম্যেন্দু অধিকারী। এবার অধিকারী পরিবার ছাড়াই ভোটে নেমেছিল তৃণমূল। অন্যদিকে,অধিকারী পরিবারের মেজো ছেলের লড়াই ছিল এবার পদ্মশিবিরের হয়ে। যদিও  এবার শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ির কাউকে প্রার্থী করা হয়নি। তবে বিজেপির হয়ে প্রচারে নেমেছিলেন শুভেন্দু। তিনি প্রচার  করলেও, দীর্ঘ ৩৬ বছর পর এবার কাঁথি পুরভোটে অধিকারী পরিবারের কোনও প্রতিনিধি ছিলেন না। কিন্তু বিজেপি শিবিরের হাল ছিল শুভেন্দুর কাঁধেই।  অন্যদিকে, রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরির ছেলে সুপ্রকাশ গিরি ছিলেন তৃণমূল শিবিরের মুখ।পুরভোটের ফলাফলে বাজিমাৎ তৃণমূলের। বলাই বাহুল্য,জিতেছেন সুপ্রকাশ গিরিও। 


কাঁথি পুরসভার ২১ ওয়ার্ডের কাঁথিতে দাপট দেখাল তৃণমূলই।  কাঁথি পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে পরাজিত কাঁথি উত্তরের বিজেপি বিধায়ক সুমিতা সিংহ। তৃণমূলের রীনা দাসের কাছে ৭৭ ভোটে হেরে গিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে, কাঁথির ১০ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছেন কাঁথি দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অরূপ দাস। পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী দিলীপ মাইতি। 
স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে অনুমান, অধিকারী পরিবারের হাত থেকে এবার কাঁথি পুরসভার রাশ যেতে পারে গিরি পরিবারের হাতে। সুপ্রকাশ গিরি হতে পারেন কাঁথি পুরসভার প্রধান। যদিও সুপ্রকাশ বলেছেন, এই বিষয়টি নিয়ে দলই সিদ্ধান্ত নেবে। দলের সিদ্ধান্ত মেনে সবাইকে দুর্নীতিমুক্ত, সচ্ছ্ব প্রশাসন উপহার দিতে হবে। 


কাঁথিতে এই জয়ে খুশি অখিল গিরি। তিনি বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলকে ব্যবহার করে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণে লিপ্ত ছিল অধিকারী পরিবার। ওই পরিবারের সেই কায়েমি স্বার্থের অবসান ঘটল।