সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় আদালত অবমাননার হুঁশিয়ারি দিতেই, তড়িঘড়ি প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থী পল্লব বারিকের ইন্টারভিউ ও অ্যাপটিটিউড টেস্ট নিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ! শুক্রবার, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় বলেন, পর্ষদ ইচ্ছাকৃতভাবে আদালতের নির্দেশ কার্যকর করেনি। দুপুর ৩টে ২০ মিনিটের সময়সীমা অতিক্রমের আগেই দুপুর ৩টে ১৫ মিনিটে শুরু হল ইন্টারভিউ।


যা হয়নি ২ মাসে, তা-ই হল মাত্র ৪ ঘণ্টার নোটিসে ! বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় আদালত অবমাননার হুঁশিয়ারি দিতেই, তড়িঘড়ি প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থী পল্লব বারিকের ইন্টারভিউ ও অ্যাপটিটিউড টেস্ট নিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ !


২০১৪ সালে প্রাথমিক টেটে অংশ নেন চাকরিপ্রার্থী পল্লব বারিক। প্রথমে সেই পরীক্ষায় তিনি পাস করেননি বলে পর্ষদের তরফে জানানো হলেও, ২০২২ সালে তারা জানায় টেটে পাস করেছেন পল্লব। বলা হয়, ৯২% নম্বর পেয়েছেন তিনি।  টেট উত্তীর্ণ জানতে পারার পরই চাকরির দাবিতে হাইকোর্টে মামলা করেন পল্লব বারিক। সেই মামলায় গত ২১ সেপ্টেম্বর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ওই চাকরিপ্রার্থীকে প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু, এরপর ২ মাসের বেশি সময় কেটে গেলেও সেই নির্দেশ কার্যকর হয়নি।


শুক্রবার, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় বলেন, পর্ষদ ইচ্ছাকৃতভাবে আদালতের নির্দেশ কার্যকর করেনি। দু'মাসের বেশি সময়েও আদালতের নির্দেশ কার্যকর করেনি পর্ষদ।


এরপরই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায় হুঁশিয়ারি দেন, ৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতের নির্দেশ না মানা হলে পর্ষদ সভাপতি গৌতম পালের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা হবে। তিনি নির্দেশ দেন, শুক্রবার দুপুর ৩টে ২০ মিনিটের মধ্যে আদালতের আগের নির্দেশ মানতে হবে পর্ষদকে।


এরপরই, আদালতের ধমক খাওয়া মাত্রই, তড়িঘড়ি পল্লব বারিকের ইন্টারভিউ ও অ্য়াপটিটিউড টেস্ট নিল পর্ষদ। গতকাল দুপুর ৩টে ১৫ নাগাদ তাঁর পরীক্ষা শুরু হয়। ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ার ভিডিওগ্রাফি করা হয়েছে। আগামী ১৮ ডিসেম্বর ইন্টারভিউয়ের ফলাফল, ভিডিওগ্রাফি আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়।


প্রসঙ্গত, প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে, বৃহস্পতিবার রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তল্লাশি চালিয়েছে CBI। আর এর পরের দিনই প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায়, কড়া মন্তব্য় করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'আমি চাই না, এটা আরেকটা সারদা মামলা হয়ে যাক! রাজ্যবাসী এত বোকা নয়, সবাই সব জানে।' সেই সঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতিতে গঠিত SIT-এর প্রধান অশ্বিন শেনভির ভূমিকা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি।