কলকাতা: আর জি কর কাণ্ড নিয়ে উত্তাল গোটা রাজ্য। সেই আবহেই বিধানসভা উপনির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেল। একদিন আগে প্রার্থিতালিকা প্রকাশ করেছিল বিজেপি। এবার প্রার্থিতালিকা প্রকাশ করল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। ছয় বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে সিতাইয়ে জোড়াফুল শিবিরের প্রার্থী সঙ্গীতা রায়। মাদারিহাটে প্রার্থী হচ্ছেন জয়প্রকাশ টোপ্পো, নৈহাটিতে সনৎ দে, হাড়োয়ায় শেখ রবিউল ইসলাম, মেদিনীপুরে সুজয় হাজরা এবং তালড্যাংরায় ফাল্গুনী সিংহবাবু। (West Bengal Assembly By Elections)


আগামী ১৩ নভেম্বর রাজ্যের ছয়টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন। ফল ঘোষণা হবে গণনা ২৩ নভেম্বর। এই উপনির্বাচন ঘিরে রাজনীতির পারদ ক্রমশ চড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ আর জি কর কাণ্ড এবং তার পর থেকে একের পর নারী নির্যাতনের ঘটনায় শাসকদলের উপর চাপ বেড়েছে। বিরোধীরা লাগাতার সুর চড়িয়ে চলেছে। তাই উপ নির্বাচন তৃণমূলের কাছে যেমন পরীক্ষা, তেমনই বিরোধী শিবিরের কাছেও এই উপ নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ।- (TMC Candidate List)


তৃণমূল, বিজেপি-র পাশাপাশি, সিপিএম এবং কংগ্রেসের ফলাফল কী হয়, সেদিকে তাকিয়ে সকলেই। কারণ তৃণমূল নিজের জায়গা ধরে রাখতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন যেমন ঘুরপাক খাচ্ছে, তেমনই লোকসভা বির্বাচনে জোর ধাক্কার পর, রাজ্যের উপ নির্বাচনে বিজেপি-কে নিয়ে মানুষের অবস্থান জানাও জরুরি। অন্য দিকে, আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে একেবারে অগ্রভাগে থাকা সিপিএম শূন্য থেকে উঠে এসে বিধানসভায় জায়গা পেতে পারে কি না, সেই নিয়েও আগ্রহ রয়েছে।  কংগ্রেসও রাজ্য বিধানসভায় নেই। সিপিএম-এর সঙ্গে জোট গড়েই উপ নির্বাচনে তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে, নাকি নয়া প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার 'একলা চলো' নীতি নেবেন, তাও দেখার।


যে ছয় আসনে এদিন প্রার্থিতালিকা প্রকাশ করেছে, তার মধ্যে মাদারিহাট ছাড়া, সবক'টি আসনই তাদের দখলে ছিল। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মাদারিহাট থেকে বিজেপি-র বিধায়ক হন মনোজ টিগ্গা। তিনি সম্প্রতি লোকসভা নির্বাচনে জিতে সংসদে প্রবেশ করেছেন। তাই ওই আসনে নির্বাচন হচ্ছে। একদিন আগে বিজেপি যে প্রার্থিতালিকা প্রকাশ করেছে, তাতে মাদারিহাটে গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী রাহুল লোহার।


অন্য দিকে, হাড়োয়ার আসনটি ছেড়ে বসিরহাটে থেকে সম্প্রতি সাংসদ হন নুরুল ইসলাম। দীর্ঘদিন ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াইয়ের পর সম্প্রতি মৃত্যু হয় তাঁর। বসিরহাট লোকসভা আসনে কবে নির্বাচন, তা এখনও পর্যন্ত জানা না গেলেও, হাড়োয়ায় রবিউলকে দাঁড় করিয়েছে তৃণমূল। বিজেপি সেখানে বিমল দাসকে দাঁড় করিয়েছে। সিতাইয়ে বিজেপি-র প্রার্থী দীপককুমার রায়। সেখানে তৃণমূলের হয়ে লড়বেন সঙ্গীতা। নৈহাটিতে বিজেপি-র রূপক মিত্রের সঙ্গে লড়াই তৃণমূলের সনতের। মেদিনীপুরে বিজেপি প্রার্থী করেছে শুভজিৎ রায়কে, তৃণমূল সুজয়কে। তালড্যাংরায় বিজেপি-র অনন্যা রায় চক্রবর্তীর সঙ্গে লড়াই ফাল্গুনীর।


বিধানসভা নির্বাচনে সাধারণত শাসকদলের পাল্লাই ভারী থাকে। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি আলাদা। আর জি কর হাসাপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় কলকাতা যখন উত্তাল, তার আঁচ পড়ে জেলাতেও। কিন্তু কলকাতার মতো সার্বিক সাড়া মেলেনি সেখান থেকে। তাই বিধানসভা নির্বাচন এবং লোকসভা নির্বাচনের মতো এবারও তৃণমূল বাজিমাত করবে, না কি লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি, সেদিকে তাকিয়ে রাজ্যবাসী।